ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার সুবিধা বা উপকারিতাগুলো জেনে নিন

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার সুবিধা বা উপকারিতা গুলো জেনে নিন

ব্যবসার হিসাব রাখার কাজটি আসলেই বেশ জটিল এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। বিশেষ করে আপনার ব্যবসাটা যদি বাড়তে থাকে তবে এর লেনদেনের সংখ্যাও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে এবং দেখা যায় একই হিসাব বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে রাখতে হয়। তখন প্রক্রিয়াটি হয়ে ওঠে আরও জটিল। এই জটিল প্রক্রিয়াটিকে সহজ করতে এসেছে বিভিন্ন একাউন্টিং বা হিসাবরক্ষণ সফটওয়্যার যা পুরনো হিসাবরক্ষণ পদ্ধতিকে করেছে ডিজিটাল। আসুন তবে এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার সুবিধা বা উপকারিতাগুলো জেনে নিই এই আর্টিকেল থেকে।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা বা উপকারিতা

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার সুবিধা বা উপকারিতাগুলো বলে শেষ করা যায় না।  আমরা এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধার কথা উল্লেখ করবো। তবে আসুন জেনে নেয়া যাক সুবিধাগুলো:

১. আপনার সময় বাঁচায়
২. হিসাবের তথ্য দেখুন যেকোন জায়গা থেকে, যেকোন সময়
৩. হিসাবরক্ষণ তথ্যের ক্ষেত্রে উন্নত নিরাপত্তা দেয়
৪. সম্পূর্ণ ডিজিটাল
৫. আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং দক্ষ
৬. আপনার খরচ কমায় এবং টাকা বাঁচায়
৭.  উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাড়ায়
৮.  নমনীয়তা এবং খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
৯. জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে
১০. ভুল চিহ্নিত করা সহজ এবং সম্পূর্ণ নির্ভুল তথ্যের নিশ্চয়তা দেয়
১১. মাপযোগ্যতা
১২. আরও সংগঠিত
১৩. সহযোগিতাকে সহজতর করে তোলে
১৪.রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং এবং রিপোর্টিংএ সাহায্য করে
১৫. কর আদেশ পালনকে সহজ করে

এছাড়াও ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে।  আপাতত এই গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাগুলোই বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।

১. আপনার সময় বাঁচায়

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপকারিতাগুলোর মধ্যে একটি হলো এটা আপনার সময় বাঁচায়। সাধারণত একটি ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্ট, ইনকাম স্টেটমেন্ট কিংবা ব্যালেন্স শীট তৈরী করতে আপনার বেশ খানিকটা সময় লাগে। কিন্তু আপনি যদি কোন একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করেন তবে  আপনার  সময় অনেক কম লাগবে। এছাড়াও একাউন্টিং সফটওয়্যার আপনার ব্যবসার প্রতিটি লেনদেন, ইনভয়েসিং, অন্যান্য সব ধরনের হিসাব, দৈনিক, মাসিক, এবং বার্ষিক রিপোর্ট বা প্রতিবেদন তৈরী সবকিছুই অনেক কম সময়ে করে দিবে।

এভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব করলে আপনার এবং আপনার কর্মচারীদের  সময় অনেক বেঁচে যাবে। এই সময়টা আপনারা অন্য  গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগাতে পারবেন।

২. হিসাবের তথ্য দেখুন যেকোন জায়গা থেকে, যেকোন সময়

একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করলে আপনি আপনার ব্যবসার সব হিসাব যেকোন জায়গা থেকে, যেকোন সময় দেখতে পারবেন এটা  অনেক বড় একটি সুবিধা। যেমন:হিসাবপাতি অ্যাপটি আপনি আপনার মোবাইলে ব্যবহার করতে পারবেন। আবার আপনার ডেস্কটপ, ট্যাব বা ল্যাপটপে ব্রাউজার থেকে ব্যবহার করতে পারবেন শুধু ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে। আবার মোবাইল অ্যাপটি আপনি অনলাইন এবং অফলাইন দুইভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন।

অর্থাৎ আপনার ব্যবসার সব হিসাব থাকছে আপনার হাতের মুঠোয় এবং আপনি তা দেখতে পারবেন যেকোন সময় তা আপনি যেখানেই থাকুন না কেনো।

৩. হিসাবরক্ষণ তথ্যের ক্ষেত্রে উন্নত নিরাপত্তা দেয়

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখলে আপনার হিসাবরক্ষণ তথ্যগুলো অনেক চমৎকারভাবে নিরাপত্তা পাবে। আপনার ব্যবসার সব হিসাবগুলো উচ্চ পর্যায়ের এনক্রিপশন অ্যালগরিদমের বহু পরতের অধীনে অনেক সুরক্ষিত থাকবে যা অবশ্যই আপনার অফিসের তাকের ফাইল থেকে  বেশী নিরাপদ এবং সুরক্ষিত। এই হিসাবগুলোতে প্রবেশ করার অধিকার শুধুমাত্র আপনার এবং আপনি আপনার ব্যবসার যে বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে প্রবেশাধিকার দিবেন তার। আর হিসাবের তথ্যগুলো যে শুধু নিরাপদ থাকে তাই নয় সেগুলো সময়ের সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিঙ্ক হয় অর্থাৎ সেগুলো আপডেটেড বা হালনাগাদ করাও হয়ে যায়।

আগেকার ডেস্কটপ-ভিত্তিক হিসাবরক্ষণ পদ্ধতিতে আপনাকে হিসাবরক্ষণ তথ্যগুলো কিছু সময় পর পর ব্যাক আপ করে রাখতে হতো। কারণ সেখানে তথ্যগুলো কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভে সংরক্ষিত থাকতো যা খুবই সংবেদনশীল একটি ব্যাপার। আপনি জানেন যে, কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভ যেকোন সময় ক্র্যাশ করতে পারে ফলে আপনি হারিয়ে ফেলতে পারেন আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখলে আপনাকে এসব ঝামেলা পোহাতে হবে না, সফটওয়্যারটিই আপনার হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার সব তথ্য ব্যাক আপ করে দিবে।

৪. সম্পূর্ণ ডিজিটাল

একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করলে আপনার ব্যবসা হয়ে যাবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল। আপনার ব্যবসায়িক  লেনদেনের  সব হিসাব হবে সফটওয়্যারে। আগেকার মতো  খাতা, কলম এবং ফাইলের প্রয়োজন হবে না। আর যদি কোনো কাগজের রশিদ থাকে  তবে তার ছবি আপনার মোবাইলে  তুলে  সফটকপি হিসেবে ভালোভাবে সংরক্ষণ করুন। তাহলে আপনাকে আর কাগজের রশিদ সামলানোর ঝামেলা পোহাতে হবে না।

৫. আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং দক্ষ

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখলে তা হিসাবরক্ষণ ব্যক্তির অপচয় কমিয়ে অল্প সময়ে বেশী কাজ করার মাধ্যমে আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং দক্ষ করে তোলে।

৬. আপনার খরচ কমায় এবং টাকা বাঁচায়

একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করলে আপনার বছরে প্রায় ৩০০ ঘন্টা সময় বেঁচে যায়। ভাবছেন কিভাবে? একটু ভেবে দেখুন সব একঘেয়ে, পুনরাবৃত্তিমূলক হিসাবের কাজগুলো যদি আপনি বা আপনার কর্মচারীরা করতেন তবে ঠিক কতোটা সময় লাগতো। আর কাগজ, কলম, ফাইল ইত্যাদি সব স্টেশনারীর খরচ বেঁচে যাচ্ছে  আরও বেঁচে যাচ্ছে ফাইল, প্রিন্টার কার্টিজ  প্রভৃতি রাখার জায়গা ।

আবার একটি ইআরপি বা এমপ্লয়ি রিসোর্স প্ল্যানিং সফটওয়্যারের মূল্য  প্রায় ১০,৪০,০০০ টাকা। সেখানে একটি একাউন্টিং  সফটওয়্যারের দাম অত্যন্ত নগণ্য। যেমন: হিসাবপাতির বেসিক প্যাকেজটি ফ্রি অর্থাৎ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন, প্রিমিয়াম প্যাকেজটি মাসে মাত্র ৩০০ টাকা এবং বিজনেস প্যাকেজটি মাসে মাত্র ৫০০ টাকা। সুতরাং আপনার ব্যবসার বা দোকানের হিসাব রাখার সফটওয়্যার হিসেবে এটা থাকতে পারে আপনার পছন্দের তালিকায়।

৭. উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাড়ায়

আপনার ব্যবসার হিসাবরক্ষক বা অর্থায়ন কর্মী  যারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখবেন, তারা কাজ করার আরও নতুন নতুন উপায় খুঁজবেন এবং হিসাব রাখার জন্য আরও অগ্রগামী পদ্ধতি উদ্ভাবন করার চেষ্টা করবেন। ফলে তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

৮. নমনীয়তা এবং খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখা অবশ্যই নমনীয় কারণ আপনি যেকোন জায়গা থেকে যেকোন সময় আপনার ব্যবসার হিসাব রাখতে পারেন। এই পদ্ধতিতে যে হিসাবরক্ষকরা হিসাব রাখেন তারা হিসাবরক্ষণের নতুন ব্যবস্থা এবং উপাদানগুলোর সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন এবং ধীরে ধীরে নতুন এ পদ্ধতির সাথে মানিয়ে নেন। এর ফলে শুধু তাদেরই উন্নতি হয়না বরং সামগ্রিকভাবে সম্পূর্ণ হিসাবরক্ষণ জগতের উন্নতি হয়।

৯. জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাবরক্ষণ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে কারণ এই পদ্ধতিটি অনেক স্বচ্ছ এবং গ্রাহকরা তাদের বাছাইকৃত হিসাবরক্ষকদের দিয়ে তাদের কাজটি করাতে অনুপ্রাণিত হন। ফলে গ্রাহকদের আত্মবিশ্বাস এবং হিসাবরক্ষকদের জবাবদিহিতা উভয়ই বৃদ্ধি পায় যা পুরো প্রক্রিয়াটিকে করে তোলে আরও স্বচ্ছ এবং নির্ভরযোগ্য।

১০. ভুল চিহ্নিত করা সহজ এবং সম্পূর্ণ নির্ভুল তথ্যের নিশ্চয়তা দেয়

একাউন্টিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে হিসাব রাখলে ভুল চিহ্নিত করা অনেক সহজ  কারণ ভুলগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চিহ্নিত হয়। ফলে মানুষের ত্রুটিগুলো নিশ্চিহ্ন হয়। বিভিন্ন হিসাবরক্ষণ অ্যাপ্লিকেশনে উচ্চ পর্যায়ের নির্ভুলতা নিশ্চিত হয় এবং তাতে ভুল সনাক্তকারীর  বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য থাকে। তাই আপনার হিসাবরক্ষণের তথ্যগুলো হয় সম্পূর্ণ নির্ভুল।

১১. মাপযোগ্যতা

আপনার ব্যবসার প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি ব্যবসাটির হিসাব রাখার জন্য পুরনো ব্যবস্থা অনুসরণ করতেই পারেন কিন্তু যখন ব্যবসাটি ধীরে ধীরে বাড়তে  থাকবে তখন এর লেনদেনের সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বাড়তে  থাকবে। যার ফলে হিসাবরক্ষণের প্রক্রিয়াটি হয়ে  ওঠবে আরও জটিল। আপনি হঠাৎ করে হিসাবরক্ষণের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিকে উন্নত করতে চাইলে অনেকটা খরচ পড়বে। এক্ষেত্রে একাউন্টিং সফটওয়্যার  সমস্যার সমাধান করতে পারে।

কারণ একাউন্টিং সফটওয়্যার আপনার ব্যবসার আকার বাড়ার সাথে সাথে এর কর্মক্ষমতা বাড়াতে পারে। আপনাকে নিজে থেকে আর অন্য কোন পদক্ষেপ নিতে হবে না। এই মাপযোগ্যতাও ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার অনেক বড় একটি সুবিধা।

১২. আরও সংগঠিত

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখাটা আরও সংগঠিত কারণ আপনি যদি কোনো নির্দিষ্ট ফাইল খোঁজেন তবে আপনাকে শুধু ফাইলটির নাম সার্চ বারে লিখে সার্চ করতে হবে এবং ফাইলটি আপনার সামনে চলে আসবে। তেমনি কোন নির্দিষ্ট কর্মচারীর কোন তথ্য হালনাগাদ করতে চাইলে বা তার সম্পর্কে কোন তথ্য জানতে চাইলেও আপনি শুধু তার নাম লিখে খুঁজলেই হয়ে যাবে। সব ফাইলগুলো নির্দিষ্ট ফোল্ডারগুলোতে সংগঠিতভাবে সংরক্ষিত থাকে। আর পুরনো হিসাবরক্ষণের ক্ষেত্রে আপনাকে টেবিল বা তাকের ওপর রাখা বিশাল ফাইলের স্তূপ থেকে ফাইলটি খুঁজে বের করতে হতো যা  অনেক বেশী কষ্টসাধ্য।

১৩. সহযোগিতাকে সহজতর করে তোলে

একাউন্টিং সফটওয়্যারে আপনি আপনার হিসাবের তথ্য বা ফাইলগুলো সহজেই আপনার সহকর্মী বা গ্রাহকদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আপনাকে শুধু ফাইলগুলো ডাউনলোড করে ইমেইল করতে হবে বা আপনি কোন অনলাইন অ্যাপ যেমন: হোয়াটস্ অ্যাপ, টেলিগ্রাম, প্রভৃতি ব্যবহার করেও শেয়ার করতে পারেন। অথবা ফাইলগুলো আপনি প্রিন্ট করে এর হার্ডকপিও শেয়ার করতে পারেন।

আবার আপনারা রিয়েল-টাইম বা একই সময়ে একই ফাইলে আপনার সহকর্মীদের সাথে কাজ করতে পারেন তাও আবার একে অন্যের কাজে ব্যাঘাত না ঘটিয়ে। আপনাদেরকে শুধু একাউন্টিং প্ল্যাটফর্মটিতে সাইন ইন করতে হবে। ফলে পারস্পরিক সহযোগিতা হয়ে ওঠবে সহজতর।

১৪. রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং এবং রিপোর্টিং-এ সাহায্য করে

রিয়েলটাইম ট্র্যাকিং এবং রিপোর্টিংয়ের জন্য আপনাকে আপনার অনলাইন একাউন্টিং সফটওয়্যারটিকে আপনার ব্যবসায়িক ব্যাংক  একাউন্ট  এর সাথে সমন্বিত করতে হবে এবং আপনি ব্যবসার খরচগুলো, ইনভেন্টরি, বিক্রয়  আরও সব প্রয়োজনীয় তথ্য রিয়েলটাইমে বা তাৎক্ষনিকভাবে দেখতে পাবেন। একাউন্টিং সফটওয়্যারের ড্যাশবোর্ড আপনাকে সব প্রয়োজনীয় তথ্য, মেট্রিক্স বা হিসাবের খোঁজ রাখার সুবিধা করে  দিবে। ব্যাংক রিকনসিলিয়েশন বেশ কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার যা একাউন্টিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনেক কম সময়ের মধ্যে সহজেই করা যায়।

১৫. কর আদেশ পালনকে সহজ করে

আপনি যদি  একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করেন তবে আপনার ব্যবসার সব হিসাবগুলো এবং বিভিন্ন আর্থিক বিবৃতিগুলো হালনাগাদ করা থাকে। এর ফলে আপনার কর আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য এবং কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করাটা অনেক সহজ হয়ে যায় এবং আপনার জন্য কর আদেশ পালন করাও হয়ে ওঠে সহজ।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার কিছু অসুবিধা

সফটওয়্যার এর মাধ্যমে হিসাব রাখার ভালো দিক ও খারাপ দিক দুই-ই আছে। কারণ পৃথিবীতে কোনকিছুই অমিশ্রিত আশীর্বাদ নয়। আসুন জেনে নেয়া যাক অসুবিধাগুলো:

খরচ

একাউন্টিং সফটওয়্যারের কিছু খরচ আছে  তবে ফ্রি সফটওয়্যারও পাওয়া যায় যেমন: হিসাবপাতি। ফ্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করলেও পরে ব্যবসার বৃদ্ধির সাথে সাথে আপনার হয়তো আপডেট করতে হতে পারে তার কিছু খরচ আছে ।একাউন্টিং সফটওয়্যার ঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য হয়তো আপনার প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া লাগতে পারে। এই প্রশিক্ষণেরও কিছু খরচ থাকতে পারে।

কারিগরি সমস্যা

সফটওয়্যারটি ব্যবহারের সময় বিভিন্ন কারিগরি সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন: বৈদ্যুতিক সমস্যা দেখা দিতে পারে,কম্পিউটার ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে, ব্যবহারকারী সফ্টওয়্যারটি ভুলভাবে ব্যবহারের কারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে প্রভৃতি।

বেকারত্ব

একাউন্টিং সফটওয়্যার আপনার ব্যবসার হিসাব রাখতে অনেক সাহায্য করে কিন্তু এটা আবার অনেকের জন্য বেকারত্বের ভয় হিসেবেও কাজ করতে পারে। কারণ অনেক কর্মচারী যারা আগে হাতে কলমে হিসাব রাখা বা ব্যবসার রশিদগুলোর দেখাশোনা প্রভৃতি কাজ করতেন ,ব্যবসায় হয়তো তাদের আর প্রয়োজন নাও থাকতে পারে।

চুরি এবং জালিয়াতি

অনেক হ্যাকার আছে যারা আপনার ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো যেমন: বিভিন্ন আর্থিক তথ্য, ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ডের তথ্য, ব্যাংক ঋণের তথ্য, প্রভৃতি চুরি করতে পারে এবং নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করে জালিয়াতি করতে পারে। তাই আপনাকে আপনার সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সিস্টেম ব্যর্থতা

যেকোন স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে  ক্র্যাশ বা যেকোন হার্ডওয়্যারের ব্যর্থতার কারণে তথ্য হারিয়ে যেতে পারে। এজন্য আপনি  গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোর কিছু ব্যাকআপ  রাখতে পারেন।

স্বাস্থ্য সমস্যা

অতিরিক্ত কম্পিউটারের ব্যবহার অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন: চোখের শুষ্কতা, চোখ ব্যথা, মেরুদন্ডে ব্যথা, মাংসপেশীর সমস্যা প্রভৃতির কারণ হতে পারে।

শেষ কথা:

এই আলোচনা থেকে স্পষ্টভাবে বলা যায় যে, ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার উপকারিতাগুলো এর অসুবিধাগুলোর থেকে অনেক বেশী। তাই এই আর্টিকেল থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার সুবিধা বা উপকারিতাগুলো জেনে নিন ভালোভাবে এবং আপনার ব্যবসার জন্য উপযুক্ত একাউন্টিং সফটওয়্যারটি বেছে নিন বিচক্ষণতার সাথে।

Search
সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ
আজই আমাদের অ্যাপ ডাউনলোড করুন
অনলাইন বা অফলাইনে যেকোন জায়গা থেকে সহজেই আপনার দৈনন্দিন ব্যবসায়িক লেনদেন পরিচালনা করুন।