আয় ব্যয়ের হিসাব রেখে ব্যবসা পরিচালনার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস

7 Essential Tips for Managing Business Income and Expenses

ব্যবসায় আয় ব্যয়ের হিসাব রাখা ব্যবসা পরিচালনার মৌলিক কাজগুলোর একটি। ব্যবসার আয় ব্যয়ের নির্ভুল হিসাব রাখার উপরেই লাভ ক্ষতি নির্ভর করে। ব্যবসায়ী মাত্রই হিসাব রাখতে হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে সফলতা নির্ভর করছে আয় ব্যয়ের হিসাব দক্ষতার সাথে রাখার উপর। তাই সফলতার সাথে নিজের ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল মেনে চলতে হয়।

আজকে আমরা ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব রাখার এমন ৭টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিয়ে আলোচনা করবো, যেগুলো আপনার ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করবে। আর আমরা সবাই জানি, সফলতা অর্জন করতে হলে দক্ষতা বৃদ্ধির কোনও বিকল্প নেই। তাই ব্যবসার হিসাব রাখার কিছু কৌশল সম্পর্কে জানবো এবং সেগুলো মেনে ব্যবসাকে আরও লাভজনক করে তুলবো।

ব্লগে যা থাকছে-

০১. ব্যক্তিগত খরচ ও ব্যবসায়িক খরচকে আলাদা করুন

একজন পেশাদার ব্যবসায়ী হওয়ার প্রথম ধাপ, ব্যক্তিগত খরচ এবং ব্যবসায়িক খরচকে আলাদা করতে হবে। পুরো ব্যবসা আপনার নিজের, কিন্তু ব্যবসার খরচ আপনার নিজের নয়। ওটা ব্যবসার জন্য বিনিয়োগ বা ব্যয় হিসেবে রেকর্ড করতে করতে হবে। একিভাবে আপনার সকল ব্যক্তিগত খরচও আপনার নিজের, এটাকে ব্যবসার খরচ হিসেবে রেকর্ড করা যাবে না।
ব্যবসার নির্ভুল আয় ব্যয়ের হিসাব তখনই পাবেন যখন ব্যক্তিগত খরচ ও ব্যবসায়িক খরচকে আলাদা করতে পারবেন। এটা না করতে পারলে, আপনার ব্যবসার সঠিক আর্থিক চিত্র কখনোই সামনে আসবে না।
যেমন- ব্যক্তিগত আর্থিক লেনদেনের জন্য আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করুন এবং ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করুন। তা না হলে, আপনার ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব রাখা প্রায় অসম্ভব!

০২. ব্যবসা পরিচালনার জন্য বাস্তবসম্মত বাজেট তৈরি করুন

ব্যবসা মানেই পণ্য ক্রয় করে বিক্রয় করা নয়। ব্যবসায় আরও নানান পদক্ষেপ নিতে হয়। যেমন- মার্কেটিং, ব্র্যান্ডিং, কমিউনিকেশন, কাস্টমার সাপোর্ট, অফিস পরিচালনা, কর্মী ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। এই সকল কাজের জন্য দরকার সঠিক কর্মপরিকল্পনা এবং আর্থিক বাজেট। মানে প্রতি বছর বা প্রতি মাসে বা প্রতি সপ্তাহে আপনার ব্যবসার জন্য একটি বাজেট থাকতে হবে। ব্যবসার খরচের জন্য বাস্তবসম্মত একটি বাজেট আপনার ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করবে এবং সঠিক লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
ব্যবসার বাজেট থাকলে আপনি জানবেন, কোন খাতে কত খরচ করা যাবে আর কোন খাতে খরচ কমাতে হবে। এটা জানা না থাকলে ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব সঠিকভাবে করতে পারবেন না। বাজেট আপনার ব্যবসার আর্থিক রোডম্যাপ হিসেবে কাজ করবে। ব্যবসার হিসাব রাখার অ্যাপ হিসাবপাতি’তে আছে ব্যয় পরিচালনা ও ব্যবসার রিপোর্টস দেখার সুবিধা। যা আপনার ব্যবসার বাজেট তৈরি করতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

০৩. ব্যবসার বাকি বকেয়া ‍উপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন

ব্যবসায় অনিয়ন্ত্রিত বকেয়া বাকি আয় ব্যয়ের হিসাবকে ভিত্তিহীন করে ফেলতে পারে! মানে আপনার কোন হিসাবেরই কোন পরিপূর্ণতা আসবে না। আপনি বাকিতে পণ্য কেনেন বা কাস্টমারের সাথে বাকিতে লেনদেন করেন, সব ধরনের বাকি বকেয়ার নির্ভুল হিসাব রাখতে হবে। যদি বকেয়া বাকির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন তাহলে আরও ভালো। এটা আপনার ব্যবসার হিসাবকে সহজ করবে।
বিশেষ করে ছোট ব্যবসায় বকেয়া বাকি আদায় করার কৌশল জানাটা জরুরি। হিসাবপাতি অ্যাপ ব্যবহার করলে বাকির মেসেজ দেয়া যায় এবং বাকি আদায় ও পরিশোধের এলার্ট পাওয়া যায়।

০৪. সকল লেনদেনের ইনভয়েস প্রদানের অভ্যাস করুন

সকল লেনদেনের ইনভয়েস প্রদান করার অভ্যাস আপনাকে রাতারাতি পেশাদার একটি ইমেজ এনে দেয়। এতে ব্যবসার বকেয়া বাকিও কমতে শুরু করে। তাই এমন অ্যাপে ব্যবসার হিসাব রাখুন যেখানে সহজেই ইনভয়েস বা বিল জেনারেট করা যায় এবং সেটা প্রিন্ট দেয়া ও শেয়ার করা যায়। বিল বা চালান একটি পেশাদার ডকুমেন্ট, এটি যেকোন লেনদেনকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। এছাড়া ইনভয়েস আর্থিক লেনদেনের রেকর্ড হিসেবে বিবেচিত হয়। যা পরবর্তিতে ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব করতেও কাজে লাগে।

০৫. প্রতিদিন ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব করার অভ্যাস করুন

মাসে বা সপ্তাহে নয়, প্রতিদিন ব্যবসার হিসাব করার অভ্যাস করুন। ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব সঠিকভাবে রেকর্ড রাখতে এর কোন বিকল্প নেই। তাই আপনার দরকার এমন একটি অ্যাপ যেটা আপনার হিসাব রাখার কাজকে সহজ করে। এর জন্য সেরা সমাধান হিসাবরক্ষণ অ্যাপ হিসাবপাতি!

০৬. ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাবের ট্র্যাক রাখুন ডিজিটালি

ব্যবসার হিসাব সবাই রাখে। কিন্তু ২০২৪ সালে এসে ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব কোথায় রাখছেন? এটাও এখন ব্যবসা পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন! টালি খাতায় বা ডাইরিতে লিখে ব্যবসার হিসাব রাখার যে প্রথাগত পদ্ধতি সেটাকে বিদায় জানাতে হবে সবার আগে! কারণ, আধুনিক ব্যবসার নির্ভুল হিসাব আপনি চাইলেও প্রথাগত পদ্ধতিতে রাখতে পারবেন না। হ্যাঁ, অনেকে ল্যাপটপ বা কমপিউটারে বা ক্লাউডভিত্তিক স্প্রেডশিটেও ব্যবসার হিসাব রাখছেন। তবে এগুলোর কোনোটাই এখন আর বাস্তবসম্মত সমাধান নয়। কারণ-

বেশিরভাগ ব্যবসা এখন অনলাইন বা ই-কমার্স ব্যবসার সাথে জড়িয়ে গেছে। ফলে ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাবে যুক্ত হয়েছে- ডেলিভারি চার্জ, বিভিন্ন পেমেন্ট মাধ্যম, ২৪ ঘন্টা অর্ডার, অনলাইন পেমেন্ট, বিভিন্ন অফার, ক্যাশব্যাক অফার, মূল্যছাড় ইত্যাদি নতুন নতুন ধারণা। সাধারণভাবেই ব্যবসার হিসাব রাখা এখন আগের মতো সরল সোজা নেই।
যেকোনো ব্যবসার জন্য ভ্যাট, ট্যাক্স সহ সরকারি নানা ফি যুক্ত হয়েছে। এমনকি প্রতিটি লেনদেনেই আছে এসব প্রদান করার জটিলতা।
বিশ্বায়নের এই যুগে ব্যবসা এখন অনেক গতিশীল। ফলে আপনার ব্যবসার হিসাব বাসায় গিয়ে টেবিলে বসে চা পান করতে করতে করবেন, সেদিন আর নেই। এখন যেকোনো জায়গা থেকে হিসাব করার প্রয়োজন পড়ে।

এতো চিন্তা না করে নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনার কি একটি হিসাব রাখার অ্যাপ প্রয়োজন? উত্তর হ্যাঁ হলে সহজ সমাধান হিসেবে ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব রাখুন ডিজিটালি। কারণ, এটাই সহজ সমাধান এবং এটাই ভবিষ্যৎ!

০৭. আয় ব্যয়ের হিসাব রাখতে সঠিক একাউন্টিং সফটওয়্যার বাছাই করুন

এবার ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব রাখতে সঠিক একাউন্টিং সফটওয়্যার বাছাই করতে হবে। আপনার ব্যবসার জন্য বিশেষায়িত একটি সহজ ও সাশ্রয়ী একাউন্টিং সফটওয়্যার বা অ্যাপে ব্যবসার হিসাব রাখা শুরু করুন। তার আগে জেনে নিতে হবে, ব্যবহারগত দিকে থেকে কী কী বিষয় বিবেচনা করে একাউন্টিং অ্যাপ নির্বাচন করবেন :

  • অ্যাপটির ইন্টারফেস ও ব্যবহারবিধি যেন সহজ ও সাবলীল হয়। যাতে অ্যাপের ব্যবহার বুঝতে আলাদা ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন না হয়। তাছাড়া কঠিন ব্যবহারবিধি আপনার হিসাবরক্ষণকে ক্লান্তিকর করতে পারে।
  • একাউন্টিং সফটওয়্যারটি মোবাইল ও ওয়েব দুটো ভার্সনেই পাওয়া যায়।
  • মোবাইল অ্যাপেই ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব সহ সকল হিসাব করা যায়।
  • ব্যবসার সকল তথ্য যেন নিরাপদ থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। তাই ক্লাউডভিত্তিক একাউন্টিং সফটওয়্যার হওয়া জরুরি।
  • বাংলাদেশের সাধারণ ব্যবসায়ীরা যেহুতু বাংলা ভাষায় অভ্যস্ত, তাই অ্যাপটিতে যেন সহজ বাংলা এবং ইংরেজি অপশন থাকে।
  • অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারটির খরচ আপনার হাতের নাগালে কিনা?

এবার দেখুন কী কী ফিচার থাকলে একাউন্টিং অ্যাপ নির্বাচন করবেন-

  • বকেয়া বাকির হিসাব রাখার সুবিধা
  • ব্যবসার ব্যয় পরিচালনা করার সুবিধা
  • আনলিমিটেড পণ্য ও পার্টিস অ্যাড সুবিধা
  • অফলাইন মোডে কাজ করার সুবিধা
  • বাংলা ও ইংরেজিতে ইনভয়েস/বিল/চালন তৈরি করার সুবিধা
  • কালারফুল ইনভয়েসের রেডি টেম্পলেট
  • ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট সল্যুশন
  • বিভিন্ন মেয়াদের রিপোর্টস দেখার সুবিধা
  • লেনদেনের বিলিং সল্যুশন
  • POS সফটওয়্যারের ফুল সাপোর্ট
  • মোবাইলে বারকোড স্ক্যানার সুবিধা
  • প্রয়োজন মতো পণ্যের ইউনিট যুক্ত করার সুবিধা
  • ডেডিকেটেড কাস্টমার সাপোর্ট টিম

বাংলাদেশের সাধারণ ব্যবসার জন্য সব দিক বিবেচনায় ভালো একটি একাউন্টিং সফটওয়্যার ‘হিসাবপাতি’। ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব রাখতে নিশ্চিন্তে এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। ‍উপরে উল্লিখিত ব্যবহারগত সকল সুবিধা এবং ফিচারগুলো ছাড়াও হিসাবপাতি’তে আরও অনেক ইউনিক সুবিধা আপনি পেয়ে যাবেন। তাছাড়া হিসাবপাতি বাংলাদেশের সবচেয়ে সাশ্রয়ী হিসাবরক্ষণ অ্যাপ।

Search
সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ
আজই আমাদের অ্যাপ ডাউনলোড করুন
অনলাইন বা অফলাইনে যেকোন জায়গা থেকে সহজেই আপনার দৈনন্দিন ব্যবসায়িক লেনদেন পরিচালনা করুন।