বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় খুঁজে নেয়াকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাদের কাছে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় খুঁজে বের করা এখন সময়ের দাবি। কারণ, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ব্যবসা শুরু করা শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের মাধ্যম নয়, বরং এটি ভবিষ্যতের জন্য দক্ষতা তৈরিরও একটি সুযোগ। তাই শুধুমাত্র টিউশনির উপর নির্ভরশীল না থেকে অনেকে ব্যবসা শুরু করতে চান। কিন্তু কীভাবে শুরু করবেন, কীভাবে সময় ম্যানেজ করবেন, এসব নিয়ে দ্বিধায় থাকেন।
এই ব্লগে আমরা পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করার পদ্ধতি এবং নতুন ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করবো।
ব্লগে যা থাকছে-
পড়ালেখার পাশাপাশি ব্যবসা কেনো করবেন?
দেখুন, সময়টা প্রতিযোগিতার এবং শুধুমাত্র একাডেমিক শিক্ষাই সফলতার জন্য যথেষ্ট নয়। পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় খুঁজে বের করা আপনার দক্ষতা বাড়াবে, আর্থিক স্বাধীনতা দেবে এবং ভবিষ্যতের পথচলা সুরক্ষিত করবে। ব্যবসা শুরু করার মাধ্যমে আপনি শুধু আয়ই করবেন না, বরং বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানের দক্ষতাও অর্জন করবেন।
- অর্থনৈতিক স্বাধীনতা: পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় খুঁজে বের করলে আপনি নিজের খরচ নিজেই বহন করতে পারবেন। আর্থিক স্বাধীনতার এই স্বাদ যে পেয়েছে সেই শুধু জানে এর মর্ম!
- দক্ষতা বৃদ্ধি: ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে যোগাযোগ দক্ষতা, সময় ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক ও ব্যাংকিং বিষয়ক বিভিন্ন জ্ঞান অর্জন করা যায়।
- ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি: ব্যবসায় অভিজ্ঞতা থাকলে ভবিষ্যতে আপনার বড় উদ্যোক্তা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। এটাকে আপনি ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে দেখতে পারেন।
- নতুন নতুন অভিজ্ঞতা: ব্যবসা আপনাকে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা দেবে যা চাকরি বা ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক হবে। মনে রাখবেন, মাঠ পর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা সবার থাকে না। এখানে আপনি অনেকের থেকে এগিয়ে থাকবেন।
ব্যবসা শুরু করার আগে কী কী প্রস্তুতি নেবেন?
নতুন ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এগুলো আপনার ব্যবসাকে সফল করতে সাহায্য করবে।
১. আপনার আগ্রহ ও দক্ষতা চিহ্নিত করুন
ব্যবসা করার জন্য প্রথমেই আপনার আগ্রহ ও দক্ষতা খুঁজে বের করতে হবে। কী ধরনের কাজে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? কোন কাজ আপনাকে আনন্দ দেয়? যেমন ধরুন, যদি আপনার ডিজাইনিং দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্স ডিজাইনিং বা কাস্টমাইজড টি-শার্ট ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
২. সময়োপযোগী ব্যবসার আইডিয়া নির্বাচন করুন
আপনার আগ্রহ ও দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে একটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া বেছে নিতে হবে। এখানে আমি কিছু জনপ্রিয় ব্যবসার আইডিয়া তুলে ধরলাম-
- অনলাইন কোচিং বা অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্স
- ফ্রিল্যান্সিং (গ্রাফিক ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট)
- ড্রপশিপিং বা ই-কমার্স
- হোমমেড প্রোডাক্ট বিক্রি (কেক, চকলেট, জুয়েলারি, আর্ট ও ক্রাফট)
- ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস
- হ্যান্ডিক্রাফট বা হস্তশিল্প নিয়ে ই-কমার্স ব্যবসা
ছোট ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আরও জানতে পড়ুন- ৪টি ছোট ব্যবসার আইডিয়া: শুরু করলেই বাজিমাত!
৩. ব্যবসার পরিকল্পনা তৈরি করুন
একটি ভালো পরিকল্পনা ব্যবসার সফলতার চাবিকাঠি। ব্যবসার পরিকল্পনায় যা যা অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে-
- লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
- সম্ভাব্য গ্রাহক
- প্রতিযোগী বিশ্লেষণ
- আয়-ব্যয়ের হিসাব
- মার্কেটিং স্ট্রাটেজি
- প্রাথমিক বাজেট
- ট্রেড লাইসেন্ট তৈরি করা
৪. পড়ালেখার পরে ব্যবসার জন্য সময় বের করুন
পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে সময় ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু বিষয় মাথায় গেঁথে রাখুন-
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ব্যবসার জন্য বরাদ্দ করতে হবে
- পড়ালেখা ও ব্যবসার সময়ের মধ্যে ব্যালান্স রাখতে হবে
- অবশ্যই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে
- অপ্রয়োজনীয় আড্ডা কমিয়ে বিজনেস নেটওয়ার্ক বাড়াতে হবে
৫. ছোট আকারে শুরু করুন এবং অনলাইনের সকল সুবিধা নিন
প্রথমেই বড় বিনিয়োগ না করে ছোট আকারে শুরু করুন। প্রাথমিক পর্যায়ে ঝুঁকি কমিয়ে ব্যবসার অভিজ্ঞতা অর্জন করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
বর্তমানে অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা খুবই জনপ্রিয়। সোশ্যাল মিডিয়া বা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সহজেই ব্যবসা শুরু করা যায়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা প্রচার করা যায়। এধরনের সকল প্রযুক্তিগত সুবিধা নেয়ার চেষ্ঠা করুন।
৬. কম খরচে বিজনেস মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডি করা শিখুন
খরচ কমিয়ে মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ডিং করার উপায় জানতে হবে। বড় বাজেটের বিজ্ঞাপন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকলে ফ্রিতে মার্কেটিং করার কিছু উপায় আছে, যেমন-
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
- ব্লগ বা কনটেন্ট মার্কেটিং
- রেফারেল মার্কেটিং
- ইমেইল মার্কেটিং
এগুলো একেবারেই ফ্রি নয়, তবে অনেক কম খরচে অনেক বেশি টার্গেট কাস্টমারের কাজে পৌঁছানো যায়।
৭. গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে প্রতিদিন সময় দিতে হবে
যেকোনো ব্যবসায় সফল হতে হলে গ্রাহকদের সন্তুষ্ট রাখা অত্যন্ত জরুরি। গ্রাহকের চাহিদা বোঝা, দ্রুত সেবা প্রদান করা ও ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে আপনি ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করতে পারেন। অনলাইনে গ্রাহকদের কমেন্ট ও মেসেজের রিপ্লে দেয়ার জন্য সময় রেব করতে হবে। পড়াশোনা ও ব্যবসার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
৮. ব্যবসার শুরু থেকেই আয় ব্যয়ের হিসাব রাখুন
ব্যবসা মানেই হিসাবের খেলা! তাই ব্যবসা করলে হিসাব নিকাশে অভ্যস্ত হতে হবে। নতুন ব্যবসা বা ছোট ব্যবসার আইডিয়া নির্বাচন করা হয়ে গেলেই ব্যবসার হিসাব রাখার জন্য একাউন্টিং টুল নির্বাচন করতে হবে। এজন্য সহজ ও সাশ্রয়ী একটি অ্যাকাউন্টিং টুল নির্বাচন করুন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী হিসাব রাখার সফটওয়্যার হিসবাপাতি ব্যবহার করতে পারেন। হিসাবপাতি অ্যাপে ব্যবসার আয় ব্যয়ের হিসাব, স্টক ম্যানেজমেন্ট, বাকি বকেয়ার হিসাব, ইনভয়েস তৈরি ইত্যাদি সকল সাপোর্ট পেয়ে যাবেন।
ব্যবসা পরিচালনার সকল সাপোর্ট পেতে ফ্রিতে ডাউনলোড করুন হিসাবপাতি অ্যাপ। প্রথমে ফ্রিতে বেসিক প্যাকেজটি ব্যবহার করে দেখুন। কাজের মনে হলে, নামমাত্র মূলে পেইড প্যাকেজের সাবস্ক্রিপশন কিনে নেবেন।
৯. বিজনেস নেটওয়ার্কিং শুরু করুন
যতই ছোট ব্যবসার আইডিয়া হোক, বিজনেস নেটওয়ার্কিং কিন্তু জরুরি। তাই শুরু থেকেই ব্যবসার সাথে জড়িত মানুষের সাথে চলাফেরা করুন। তাদের সাথে যোগাযোগ বাড়ান। কীভাবে এই কাজটি করবেন তা জানতে এই লেখাটি পড়তে পারেন- উদ্যোক্তাদের জন্য নেটওয়ার্কিং: কী, কেন এবং কীভাবে করবেন?
১০. প্রথমে নিজে ব্যবসাটি বুঝুন তারপর কর্মী নিয়োগ দিন
ব্যবসার শুরুতেই নিজে ব্যবসাটি না বুঝে কর্মী নিয়োগ দেয়াটা বোকামি হবে। তাই আগে নিজে ভালোভাবে ব্যবসাটি বুঝতে হবে তারপর প্রয়োজনে কর্মী নিয়োগ দিতে হবে।
১১. ব্যবসা বাড়লেই কর্মী ব্যবস্থাপনা অ্যাপ ব্যবহার করুন
যখন ব্যবসা কিছুটা বাড়বে, তখন স্বাভাবিকভাবেই কর্মী নিয়োগ বা টিম গঠনের প্রয়োজন পড়বে। এ সময় কর্মী ব্যবস্থাপনার জন্য অবশ্যই ডিজিটাল টুল ব্যবহার করবেন। এমন একটি অ্যাপ বাছাই করবেন যেটাতে কর্মীদের টাইম ট্র্যাকিং, শিফট প্ল্যান, ছুটি ব্যবস্থাপনা, পে-রোল, ডকুমেন্ট ভল্টসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা পাওয়া যায়।
এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ হিসেবে নির্বাচন করুন- হাজিরা। কারণ, এই সকল সুবিধা সহ সাশ্রয়ী দামে হাজিরা-ই সেরা। অ্যাপটি ফ্রিতে ডাউনলোড করুন। আরও বিস্তারিত জানতে পড়তে পারেন- ছোট ব্যবসার জন্য এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার : হাজিরা
পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় খুঁজে নেওয়া ও সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব যদি আপনি সঠিক পরিকল্পনা করতে পারেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করা চ্যালেঞ্জিং হলেও এটি অসম্ভব নয়। নতুন ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নিতে গিয়ে যদি সঠিক পথ অনুসরণ করেন, তবে আপনি পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি একজন সফল উদ্যোক্তাও হয়ে উঠতে পারেন। তাই দ্রুত উদ্যোগ নিন, ছোট পরিসরে শুরু করুন এবং ধাপে ধাপে এগিয়ে যান!
ডেমো দেখে সহজ তিনটি ধাপে হিসাবপাতি’তে যাত্রা শুরু করুন!
- ১ম ধাপ- হিসবাপাতি’তে সাইন আপ করুন:
প্রথমেই হিসাবপাতি’র ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ব্যবসার জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। অথবা গুগল প্লে স্টোর থেকে হিসাবপাতি অ্যাপটি ডাউনলোড করুন এবং রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন। হিসাবপাতি’তে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং এটি সম্পূর্ণ ফ্রি!
- ২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন:
সাইন আপ করে প্রথমেই মালিক হিসেবে আপনার কোম্পানির প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ব্যবসার প্রোফাইল সেট-আপ করুন। তারপর ইনভেনটরি থেকে শুরু করে ইউনিট, ক্রয়-বিক্রয়, বাকি বকেয়া, ইনভয়েস এবং লেনদেন সহ ব্যবসার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সেট-আপ করুন। এরপর শুরু করুন প্রতিদিনের লেনদেন আপডেট রাখার কাজ।
- ৩য় ধাপ- হিসাবপাতি’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন:
হিসাবপাতি’তে ব্যবসার হিসাব রাখা শুরু করার পরে, প্রয়োজনীয় এবং ইউনিক ফিচারগুলো ব্যবহার করতে থাকুন। যেমন- ইনভয়েস, বারকোড স্ক্যানার, ইউনিট, ব্যয় ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।
হিসাবপাতি’র ব্যবহারবিধি ও ফিচারের বিস্তারিত বুঝতে ইউটিউবে বাংলায় ডেমো ভিডিও দেখুন।
জমা খরচের ডিজিটাল খাতা- হিসাবপাতি’র ডেমো
হিসাবপাতি’র সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ৯৯ টাকা থেকে শুরু!
হিসাবপাতি বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী হিসাবরক্ষণ অ্যাপ। এর সাবস্ক্রিপশন ফি মাসিক ও বাৎসরিক দুটি মেয়াদে এবং তিনটি সুলভ প্যাকেজে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে।
- ০১. বেসিক প্যাকেজ: বেসিক প্যাকেজটি সম্পূর্ণ ফ্রি! মানে, আপনি সাবস্ক্রিপশন কেনার আগে ফ্রিতে অ্যাপটি ব্যবহার করে দেখতে পারছেন।
- ০২. প্রিমিয়াম প্যাকেজ: প্রিমিয়াম প্যাকেজের মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ৯৯ টাকা এবং এই প্যাকেজের বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনে আছে ১৭% ডিসকাউন্ট! এতে এক বছরে খরচ পড়বে মাত্র ৯৯৯ টাকা!
- ০৩. বিজনেস প্যাকেজ: বিজনেস প্যাকেজর মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ১৯৯ টাকা। এই প্যাকেজেও বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনে প্রিমিয়ামের মতোই আছে ১৭% ডিসকাউন্ট! তাই এক বছরে খরচ পড়ছে মাত্র ১৯৯০ টাকা!
হিসাবপাতি অ্যাপের সকল প্যাকেজের ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আজই বেছে নিন আপনার পছন্দের প্যাকেজটি! আপনার ব্যবসার জন্য শুভকামনা!