‘পর্যাপ্ত টাকা ছিলো না, তাই ব্যবসা করতে পারিনি!’ এমন আক্ষেপ আছে, এরকম মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা পর্যাপ্ত পুঁজির অভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারেননি। কিন্তু বর্তমান সময়ে এই আক্ষেপ কতটুকু যুক্তিসংগত? কারণ, ডিজিটাল দুনিয়ায় ছোট পুঁজিতেই ব্যবসা শুরু করা যায়। এমনকি ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা করে অনেকেই তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন!
তাই বর্তমান সময়ে যারা স্বপ্ন দেখেন নিজের একটা ব্যবসা থাকবে, কিন্তু পুঁজির অভাবে করতে পারছেন না, তারা আর পিছিয়ে থাকবেন না। কারণ, ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা করা অসম্ভব কিছু নয়। সঠিক পরিকল্পনা, কঠোর পরিশ্রম এবং সৃজনশীলতা দিয়ে আপনি ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন।
এই ব্লগে আমরা আলোচনা করব কেন ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা করা উচিত এবং কীভাবে তা করতে পারেন।
ব্লগে যা থাকছে-
ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা কেন করবেন?
১. ঝুঁকি কম সম্ভাবনা বেশি
বড় পুঁজি বিনিয়োগ মানেই বড় ঝুঁকি! আপরদিকে ছোট পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করলে ঝুঁকি কিছুটা কম থাকে। আপনি ধাপে ধাপে ব্যবসা বড় করতে পারেন, যা আপনাকে অর্থনৈতিকভাবে নিরাপদ রাখবে। আপনি যদি নতুন ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন, তাহলে বড় অংকের বিনিয়োগ করা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ছোট পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করে আপনি ধীরে ধীরে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারেন এবং ব্যবসায়িক ঝুঁকি কমাতে পারেন।
২. তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতা
আজকের ডিজিটাল যুগে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শুধু অল্প খরচে নয়, বিনা পুঁজিতেও কিছু ব্যবসা শুরু করা সম্ভব! বিশেষ করে অনলাইন মার্কেটপ্লেস, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা অনেক সহজ হয়ে গেছে। আর তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতা কাস্টমার খোঁজা থেকে শুরু করে মার্কেটিং, লেনদেন, স্টক সামলানো ইত্যাদি কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছে।
৩. সফল উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ
প্রথাগত কর্মসংস্থানের পেছনে না ছুটে নিজের স্বপ্ন পূরণ করার সুযোগ আসে। আপনি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং ধাপে ধাপে আপনার ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন। ছোট পুঁজি বিনিয়োগের কারণে উদ্যোক্তা হওয়ার পথটা কিছুটা মসৃণ হয়। আপনি সহজেই ব্যবসার পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে পারেন এবং নতুন সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেন। বড় পুঁজির বড় ব্যবসায় এই সুযোগ পাওয়া কঠিন!
৪. তুলনামূলক কম প্রতিযোগিতা
ছোট পুঁজির ব্যবসায় প্রতিযোগিতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। আপনি এমন একটি সেক্টর বা নিশ বেছে নিতে পারেন যেখানে প্রতিযোগিতা কম এবং চাহিদা বেশি। এমন কিছু প্রোডাক্ট বা সেবা আপনাকে দ্রুত সাফল্য অর্জনে সাহায্য করবে। ছোট পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করে আপনি ধীরে ধীরে ব্যবসার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে শিখতে পারবেন। এটি আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করবে এবং ভবিষ্যতে বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করবে।
ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা কীভাবে করবেন?
১. সঠিক ব্যবসার আইডিয়া নির্বাচন করুন
ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসার জন্য উপযুক্ত বিজনেস আইডিয়া বেছে নেয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এমন ব্যবসা বেছে নিন যা কম খরচে শুরু করা যায় কিন্তু লাভজনক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিছু জনপ্রিয় আইডিয়া যেমন-
- অনলাইন ই-কমার্স
- ফ্রিল্যান্সিং
- ড্রপশিপিং
- ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস
- হোম-মেড ফুড বিজনেস
- এগ্রিকালচারাল অর্গানিক প্রোডাক্টস ইত্যাদি।
২. শুরুতেই সঠিক সেক্টর বা নিশ নির্বাচন
ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা করার প্রথম ধাপ হলো সঠিক সেক্টর বা নিশ নির্বাচন করা। এমন একটি পণ্য বা সেবা বেছে নিতে পারেন যার চাহিদা বেশি কিন্তু সরবরাহ কম। এটি আপনাকে দ্রুত মার্কেটে পরিচিতি দেবে এবং আপনার স্থান করে নিতে সাহায্য করবে।
৩. একটি ভালো পরিকল্পনা তৈরি করুন
পরিকল্পনা ছাড়া ব্যবসা শুরু করা মানেই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ! তাই একটি কৌশলগত বিজনেস প্ল্যান তৈরি করুন যেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকবে-
- ব্যবসার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
- ব্যবসার বাজেট পরিকল্পনা
- নির্ভুল মার্কেট রিসার্চ
- ব্যবসার প্রতিযোগীদের তালিকা
- একটি বা দুটি মার্কেটিং কৌশল
বর্তমান সময়ে অনলাইন ব্যবসা ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায়। আপনি সামান্য বিনিয়োগে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পণ্য বিক্রি শুরু করতে পারেন। অনলাইন ব্যবসায় প্রচার খরচ কম এবং গ্রাহক বা কাস্টমার সংখ্যা বেশি।
৪. পার্টনারশিপ বা শেয়ারে ব্যবসা শুরু করুন
ছোট পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করার জন্য পার্টনারশিপ একটি ভালো বিকল্প। আপনি এমন কাউকে খুঁজে নিন যার সাথে আপনার দক্ষতা এবং পুঁজি যুক্ত হলে ব্যবসা সফল হবে। পার্টনারশিপের মাধ্যমে আপনি ব্যবসায়িক ঝুঁকি ভাগ করে নিতে পারেন এবং ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারেন। এতে ব্যবসার বড় করতেও সুবিধা হয়।
৫. সাশ্রয়ী বিপণন এবং ব্র্যান্ডিংয়ের কৌশল
ছোট পুঁজিতে ব্যবসা করার সময় বিপণন বা মার্কেটিংয়ে কৌশলী এবং সাশ্রয়ী হওয়া জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং এবং ইমেইল মার্কেটিং এর মতো ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করে আপনি কম খরচে বেশি গ্রাহক কাছে পৌঁছাতে পারেন। এজন্য প্রচুর টাকা ব্যয় করা সম্ভব না হলে, স্মার্ট মার্কেটিং করতে হবে-
- সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন যেমন- ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, ইউটিউব ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে ফ্রি মার্কেটিং করুন।
- কনটেন্ট মার্কেটিং শুরু করুন যেমন- ব্লগ, ভিডিও কনটেন্ট, ইনফোগ্রাফিক ও রিভিউ শেয়ারের মাধ্যমে আপনার ব্র্যান্ডের প্রচার করুন।
- গ্রাহকদের রেফারেল পদ্ধতি চালু করতে পারেন। পুরাতন গ্রাহকদের মাধ্যমে নতুন গ্রাহক আনতে পারলে দ্রুত ব্যবসা বৃদ্ধি পায়।
৬. পর্যাপ্ত গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করুন
ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা করার সময় গ্রাহক সন্তুষ্টির দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। গ্রাহকদের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলুন এবং তাদের প্রতিটি অভিযোগ বা পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিন। সন্তুষ্ট গ্রাহকরা আপনার ব্যবসার সত্যিকারের মার্কেটার! তাই-
- কাস্টমার ফিডব্যাক সংগ্রহ করুন
- দ্রুত সমস্যার সমাধান করুন
- গ্রাহকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন
৭. ডিজিটাল পেমেন্ট ও ই-কমার্স সুবিধা ব্যবহার করুন
যেহেতু ছোট পুঁজির ব্যবসায় নগদ লেনদেন সমস্যা তৈরি করতে পারে, তাই ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতিগুলো কাজে লাগান। বিকাশ, নগদ, রকেট, পেপ্যাল, কার্ড এবং অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে সহজে পেমেন্ট সংগ্রহ করা যায়।
৮. ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করুন
ব্যবসা পরিচালনার খরচ কমিয়ে লাভ বাড়ানো যায়। তাই ছোট পুঁজিতে ব্যবসা পরিচালনার জন্য অপ্রয়োজনীয় খরচ কমাতে হবে। আরও জানতে পড়ুন- ছোট ব্যবসার খরচ কমিয়ে লাভ বাড়াবেন কীভাবে?
- অনলাইন ভিত্তিক কাজ বেশি করুন।
- বড় অফিস বা দোকান না নিয়ে বাড়ি থেকেই শুরু করুন।
- প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম লিজ নিন, কিনবেন না। যেমন- দোকান, জমি, মেশিন ইত্যাদি।
- ব্যবসা পরিচালনার জন্য হিসাবরক্ষণ অ্যাপ ব্যবহার করুন। দেশের জন্য তৈরি একাউন্টিং অ্যাপ ‘হিসাবপাতি’ হতে পারে আপনার ব্যবসা পরিচালনার সেরা সমাধান।
ছোট পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করার পর ধারাবাহিকভাবে উন্নতির দিকে নজর দিতে হবে। ব্যবসার প্রতিটি দিক নিয়মিত পর্যালোচনা করুন এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনুন। এটি আপনাকে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখবে।
আগেই বলেছি, সঠিক পরিকল্পনা, কঠোর পরিশ্রম এবং সৃজনশীলতা দিয়ে আপনি ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন। সঠিক নিশ নির্বাচন, অনলাইন ব্যবসা, পার্টনারশিপ, সাশ্রয়ী বিপণন কৌশল, গ্রাহক সন্তুষ্টি এবং ক্রমাগত উন্নতির দিকে নজর দিয়ে আপনি সাফল্য অর্জন করতে পারেন। ছোট পুঁজিতে বড় ব্যবসা করার মাধ্যমে আপনি শুধু আর্থিক সাফল্যই নয়, ব্যক্তিগত সন্তুষ্টিও অর্জন করতে পারেন। তাই আর দেরি না করে আজই আপনার ব্যবসার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যান।
ডেমো দেখে সহজ তিনটি ধাপে হিসাবপাতি’তে যাত্রা শুরু করুন!
- ১ম ধাপ- হিসবাপাতি’তে সাইন আপ করুন:
প্রথমেই হিসাবপাতি’র ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ব্যবসার জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। অথবা গুগল প্লে স্টোর থেকে হিসাবপাতি অ্যাপটি ডাউনলোড করুন এবং রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন। হিসাবপাতি’তে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং এটি সম্পূর্ণ ফ্রি!
- ২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন:
সাইন আপ করে প্রথমেই মালিক হিসেবে আপনার কোম্পানির প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ব্যবসার প্রোফাইল সেট-আপ করুন। তারপর ইনভেনটরি থেকে শুরু করে ইউনিট, ক্রয়-বিক্রয়, বাকি বকেয়া, ইনভয়েস এবং লেনদেন সহ ব্যবসার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সেট-আপ করুন। এরপর শুরু করুন প্রতিদিনের লেনদেন আপডেট রাখার কাজ।
- ৩য় ধাপ- হিসাবপাতি’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন:
হিসাবপাতি’তে ব্যবসার হিসাব রাখা শুরু করার পরে, প্রয়োজনীয় এবং ইউনিক ফিচারগুলো ব্যবহার করতে থাকুন। যেমন- ইনভয়েস, বারকোড স্ক্যানার, ইউনিট, ব্যয় ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।
হিসাবপাতি’র ব্যবহারবিধি ও ফিচারের বিস্তারিত বুঝতে ইউটিউবে বাংলায় ডেমো ভিডিও দেখুন।
জমা খরচের ডিজিটাল খাতা- হিসাবপাতি’র ডেমো
হিসাবপাতি’র সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ৯৯ টাকা থেকে শুরু!
হিসাবপাতি বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী হিসাবরক্ষণ অ্যাপ। এর সাবস্ক্রিপশন ফি মাসিক ও বাৎসরিক দুটি মেয়াদে এবং তিনটি সুলভ প্যাকেজে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে।
- ০১. বেসিক প্যাকেজ: বেসিক প্যাকেজটি সম্পূর্ণ ফ্রি! মানে, আপনি সাবস্ক্রিপশন কেনার আগে ফ্রিতে অ্যাপটি ব্যবহার করে দেখতে পারছেন।
- ০২. প্রিমিয়াম প্যাকেজ: প্রিমিয়াম প্যাকেজের মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ৯৯ টাকা এবং এই প্যাকেজের বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনে আছে ১৭% ডিসকাউন্ট! এতে এক বছরে খরচ পড়বে মাত্র ৯৯৯ টাকা!
- ০৩. বিজনেস প্যাকেজ: বিজনেস প্যাকেজর মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ১৯৯ টাকা। এই প্যাকেজেও বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনে প্রিমিয়ামের মতোই আছে ১৭% ডিসকাউন্ট! তাই এক বছরে খরচ পড়ছে মাত্র ১৯৯০ টাকা!
হিসাবপাতি অ্যাপের সকল প্যাকেজের ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আজই বেছে নিন আপনার পছন্দের প্যাকেজটি! আপনার ব্যবসার জন্য শুভকামনা!