বাংলাদেশে অনলাইন ব্যবসা শুরু করা অনেক তরুণ উদ্যোক্তার স্বপ্ন। ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্রমবর্ধমান হার এবং প্রযুক্তির সহজলভ্যতা বাংলাদেশের অনলাইন ব্যবসার বাজারকে চাঙা করে তুলেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে অনলাইন ব্যবসা শুরু করা অনেক সহজ এবং লাভজনক। ই-কমার্স, ড্রপশিপিং, ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি, ফ্রিল্যান্সিং এবং সেবা-ভিত্তিক ব্যবসাগুলোর চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তবে, সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি ছাড়া এই ব্যবসায় সাফল্য অর্জন করা কঠিন।
আজকের ব্লগে আমরা ধাপে ধাপে আলোচনা করবো কীভাবে বাংলাদেশে অনলাইন ব্যবসা শুরু করবেন, কোন কোন বিষয়ের দিকে নজর দেবেন?
ব্লগে যা থাকছে-
অনলাইন ব্যবসার সম্ভাবনা ও সুবিধা
অনলাইন ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি শুরু করতে বড় পুঁজি বা বড় আকারের প্রতিষ্ঠানিক প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না।
আপনার সামান্য কিছু প্রস্তুতিই যথেষ্ট-
- কম খরচে, এমনকি বিনা খরচে শুরু করার সুযোগ
- দ্রুত ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানোর সুবিধা
- অনলাইন শপ বা দোকান ২৪/৭ খোলা রাখার সুবিধা
- বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ
বাংলাদেশের বাজারে বেশ কিছু সফল অনলাইন ব্যবসার উদাহরণ রয়েছে, যেমন- ফ্যাশন হাউস, গ্যাজেটস এবং গ্রোসারি ডেলিভারি সার্ভিস। আপনি যদি সঠিক পরিকল্পনা এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করেন তাহলে সাফল্যের সম্ভাবনা অনেক বাড়বে।
বাংলাদেশে অনলাইন ব্যবসার বর্তমান চিত্র
বাংলাদেশের ই-কমার্স খাত ইতোমধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এবং অনলাইন ক্রেতার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
একটু পরিসংখ্যানের দিকে তাকাই-
- ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ই-কমার্স মার্কেট প্রায় ৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে ।
- অনলাইন পেমেন্ট এবং মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারের হার ৬০% বৃদ্ধি পেয়েছে।
- অধিকাংশ ক্রেতা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কেনাকাটা করছেন।
এই পরিসংখ্যান আপনাকে অনলাইন ব্যবসা শুরু করার জন্য উৎসাহিত করবেই!
৭টি ধাপে বাংলাদেশে অনলাইন ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নিন
১. মার্কেট রিসার্চ এবং ব্যবসার আইডিয়া নির্বাচন করুন
যেকোনো ব্যবসার মূল ভিত্তি হলো ভালো একটি বিজনেস আইডিয়া এবং যথাযথ বাজার গবেষণা বা মার্কেট রিসার্চ। অনলাইন ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে জানার আগে আপনাকে বুঝতে হবে কোন পণ্য বা সেবা জনপ্রিয় এবং বাজারে এর প্রতিযোগিতা কেমন।
কীভাবে বাজার গবেষণা করবেন?
- গুগল ট্রেন্ডস ব্যবহার করুন- আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের জন্য সার্চ ট্রেন্ড কী বলছে সেটা জানুন।
- ফেসবুক গ্রুপ এবং কমিউনিটি পর্যবেক্ষণ করুন- কোথায় কী ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে আলোচনা হয়? কী কী পণ্য মানুষ অনলাইনে কিনতে অভ্যস্ত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করুন।
- কনজিউমার রিভিউ পড়ুন- জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইটের রিভিউ দেখে মানুষের চাহিদা বুঝতে পারবেন।
- প্রতিযোগীদের অ্যানালাইসিস করুন- সফল ব্যবসাগুলোর ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়ার ধরন এবং কাস্টমারদের সম্পৃক্ততা কেমন তা লক্ষ্য করুন।
২. আইনগত প্রক্রিয়া এবং ব্যবসার নিবন্ধন
বাংলাদেশে অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে সামান্য কিছু আইনি দিক বিবেচনা করতে হয়।
ব্যবসার নিবন্ধন কীভাবে করবেন?
- ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করুন: স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এটি সংগ্রহ করতে পারেন।
- ভ্যাট ও ট্যাক্স রেজিস্ট্রেশন করুন: নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির পণ্য বা সেবার জন্য ব্যবসা করার সময় ভ্যাট নিবন্ধন গুরুত্বপূর্ণ, এটা করে ফেলুন।
- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলুন: ব্যবসার লেনদেনের জন্য আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা জরুরি।
৩. পণ্য সরবরাহ করার জন্য সাপ্লাই চেইন তৈরি
আপনার পণ্য কীভাবে সংগ্রহ করবেন এবং গ্রাহকের কাছে কীভাবে পৌঁছাবেন, তা শুরুতেই পরিকল্পনা করা জরুরি।
ব্যবসার ধরন অনুসারে স্ট্র্যাটেজি
- ড্রপশিপিং মডেল- এই মডেলে আপনি নিজে কোনো স্টক রাখবেন না, সরাসরি সাপ্লায়ারের কাছ থেকে গ্রাহকের কাছে পাঠানো হবে।
- নিজস্ব প্রোডাক্ট তৈরি- এটা ভালো উদ্যোগ তবে, কারিগর বা প্রস্তুতকারক হিসেবে কাজ করলে গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে।
- লোকাল রিসেলার ব্যবসা- অন্যদের পণ্য কিনে বিক্রি করতে চাইলে ভালো সাপ্লায়ার খুঁজে নিতে হবে।
৪. অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করুন
ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া সবখানে আপনার উপস্থিতি নিশ্চিত করুন। আপনার বাজেট ও লক্ষ্য অনুযায়ী অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুন-
- ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পেইজ দ্রুত শুরু করার জন্য ভালো।
- ই-কমার্স ওয়েবসাইট বড় পরিসরে ব্যবসার জন্য ভালো। Shopify, WooCommerce বা Wix ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করুন।
- অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বিক্রি করতে চাইলে Daraz, AjkerDeal এর মতো প্ল্যাটফর্মে পণ্য লিস্ট করতে পারেন।
৫. ডিজিটাল মার্কেটিং ও গ্রাহক আকর্ষণ করা
কন্টেন্ট মার্কেটিং
- এসইও (SEO) অপ্টিমাইজড ব্লগ লিখুন। মানে, ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে ব্লগ লিখুন।
- ভিডিও মার্কেটিং করুন। ইউটিউব, ফেসবুক ও টিকটকে কনটেন্ট পোস্ট করুন।
- ইমেইল মার্কেটিং করুন। সম্ভাব্য গ্রাহকদের জন্য নিয়মিত ইমেইল ক্যাম্পেইন করুন।
পেইড মার্কেটিং
- ফেসবুক ও গুগল অ্যাডস- কাস্টমার টার্গেটেড বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে কাস্টমার আকর্ষণ করুন।
- ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং- জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে ব্র্যান্ড প্রচার করুন। নায়ক নায়িকা নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা ইনফ্লুয়েন্স করতে পারেন তাদের দিয়ে করুন।
৬. শুরু থেকেই আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও হিসাব রাখা শিখুন
ব্যবসার আয়-ব্যয়ের হিসাব সঠিকভাবে না রাখলে লোকসান হতে পারে। তাই হিসাবপাতি অ্যাপ বা হিসাবরক্ষণ সফটওয়্যার ব্যবহার করে লেনদেন, ইনভেন্টরি এবং প্রফিট ট্র্যাক করুন।
কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন?
- হিসাবপাতি অ্যাপ- সহজে বিক্রি, ব্যয়, বাকি বকেয়া, এবং লাভের হিসাব রাখতে সাহায্য করে।
- এক্সেল শিট- ছোট ব্যবসার জন্য মানানসই, তবে সময়সাপেক্ষ হবে।
- ক্লাউড অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার- বড় ব্যবসার জন্য Zoho Books বা QuickBooks ব্যবহার করতে পারেন। তবে বাংলাদেশের জন্য হিসাবপাতি অ্যাপটি থেকে সেরা সমাধান পাবেন।
৭. স্বল্প পুঁজিতে বা বিনা টাকায় অনলাইন ব্যবসা
যদি স্বল্প পুঁজিতে অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে নিচের রাস্তাগুলো অবলম্বন করতে পারেন-
- ফ্রিল্যান্সিং ও ডিজিটাল প্রোডাক্ট যেমন- নিজস্ব দক্ষতা ব্যবহার করে সেবা বিক্রি করুন।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করুন- অন্য কোম্পানির পণ্য প্রচার করে কমিশনের ব্যবস্থা করুন। এটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
- ড্রপশিপিং- পণ্য কিনতে না হয় এমন ব্যবসার মডেল অনুসরণ করুন।
সফল অনলাইন ব্যবসার জন্য কিছু টিপস
- কাস্টমার সাপোর্ট নিশ্চিত করুন। দ্রুত উত্তর দিন ও সমস্যা সমাধান করুন।
- ফোন নম্বর ও লাইভ চ্যাট অপশন রাখুন। গ্রাহকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করুন।
- বাজার পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলুন। প্রতিযোগীদের কৌশল বোঝার চেষ্টা করুন এবং নিজেকে আপডেট রাখুন।
- ব্যবসার আয় ব্যয়ের সঠিক হিসাব রাখুন। হিসাবপাতি অ্যাপ ব্যবহার করে লেনদেন ট্র্যাক করুন।
বাংলাদেশে অনলাইন ব্যবসা শুরু করা এখন আগের চেয়ে সহজ। তবে সফল হতে হলে বাজার বিশ্লেষণ, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতে হবে। একটি সঠিক হিসাবরক্ষণ সফটওয়্যার বা হিসাবপাতি অ্যাপ ব্যবহার করে ব্যবসার সব লেনদেন সহজ করতে পারেন। সঠিক পরিকল্পনা এবং ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসায় সাফল্য অর্জন সম্ভব। তাহলে আপনি কি আপনার ব্যবসার জন্য ডিজিটাল হিসাব ব্যবস্থাপনা শুরু করতে প্রস্তুত? হিসাবপাতি অ্যাপ ব্যবহার করে দেখুন!
ডেমো দেখে সহজ তিনটি ধাপে হিসাবপাতি’তে যাত্রা শুরু করুন!
- ১ম ধাপ- হিসবাপাতি’তে সাইন আপ করুন:
প্রথমেই হিসাবপাতি’র ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ব্যবসার জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। অথবা গুগল প্লে স্টোর থেকে হিসাবপাতি অ্যাপটি ডাউনলোড করুন এবং রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন। হিসাবপাতি’তে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং এটি সম্পূর্ণ ফ্রি!
- ২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন:
সাইন আপ করে প্রথমেই মালিক হিসেবে আপনার কোম্পানির প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ব্যবসার প্রোফাইল সেট-আপ করুন। তারপর ইনভেনটরি থেকে শুরু করে ইউনিট, ক্রয়-বিক্রয়, বাকি বকেয়া, ইনভয়েস এবং লেনদেন সহ ব্যবসার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সেট-আপ করুন। এরপর শুরু করুন প্রতিদিনের লেনদেন আপডেট রাখার কাজ।
- ৩য় ধাপ- হিসাবপাতি’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন:
হিসাবপাতি’তে ব্যবসার হিসাব রাখা শুরু করার পরে, প্রয়োজনীয় এবং ইউনিক ফিচারগুলো ব্যবহার করতে থাকুন। যেমন- ইনভয়েস, বারকোড স্ক্যানার, ইউনিট, ব্যয় ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।
হিসাবপাতি’র ব্যবহারবিধি ও ফিচারের বিস্তারিত বুঝতে ইউটিউবে বাংলায় ডেমো ভিডিও দেখুন।
জমা খরচের ডিজিটাল খাতা- হিসাবপাতি’র ডেমো
হিসাবপাতি’র সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ৯৯ টাকা থেকে শুরু!
হিসাবপাতি বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী হিসাবরক্ষণ অ্যাপ। এর সাবস্ক্রিপশন ফি মাসিক ও বাৎসরিক দুটি মেয়াদে এবং তিনটি সুলভ প্যাকেজে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে।
- ০১. বেসিক প্যাকেজ: বেসিক প্যাকেজটি সম্পূর্ণ ফ্রি! মানে, আপনি সাবস্ক্রিপশন কেনার আগে ফ্রিতে অ্যাপটি ব্যবহার করে দেখতে পারছেন।
- ০২. প্রিমিয়াম প্যাকেজ: প্রিমিয়াম প্যাকেজের মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ৯৯ টাকা এবং এই প্যাকেজের বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনে আছে ১৭% ডিসকাউন্ট! এতে এক বছরে খরচ পড়বে মাত্র ৯৯৯ টাকা!
- ০৩. বিজনেস প্যাকেজ: বিজনেস প্যাকেজর মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ১৯৯ টাকা। এই প্যাকেজেও বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনে প্রিমিয়ামের মতোই আছে ১৭% ডিসকাউন্ট! তাই এক বছরে খরচ পড়ছে মাত্র ১৯৯০ টাকা!
হিসাবপাতি অ্যাপের সকল প্যাকেজের ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আজই বেছে নিন আপনার পছন্দের প্যাকেজটি! আপনার ব্যবসার জন্য শুভকামনা!