কিভাবে বাংলাদেশে মুদীর ব্যবসা শুরু করবেন এবং টিকিয়ে রাখবেন?

কিভাবে বাংলাদেশে একটি মুদীর ব্যবসা শুরু করবেন এবং রক্ষণাবেক্ষণ করবেন

মুদীর ব্যবসা সবসময়ই একটি জনপ্রিয় ব্যবসা কারণ আপনার সবসময়ই দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রয়োজন পড়ে, তা আপনি বাংলাদেশেই থাকুন বা আমেরিকাতেই থাকুন। পরিসংখ্যান বলছে, সুপারমার্কেট এবং বিভিন্ন ধরনের মুদীর দোকান থেকে ২০২০ সালে বিক্রির পরিমাণ ছিলো প্রায় ৭৪২ বিলিয়ন ডলার, যা যুক্তরাষ্ট্রের পানীয় এবং খাদ্য সামগ্রীর খুচরা বাজারের প্রায় ৮৬%। আপনি কি একটি মুদীর ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন বা বর্তমানে ব্যবসাটি চালাচ্ছেন? চিন্তা নেই, আমরা এখানে একটি মুদীর ব্যবসা কিভাবে শুরু করতে হয় এবং টিকিয়ে রাখতে হয় সে বিষয়ে আলোচনা করবো।

এখানে রইলো একটি ছোটো শহরে মুদীর দোকান খোলার কিছূ সুবিধা

আপনি যেকোনো উপযুক্ত জায়গাতেই একটি মুদীর দোকান খুলতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি এটা কোনো ছোটো শহরে বা গ্রামীন এলাকায় খোলেন, তবে আপনি নিচে উল্লেখিত সুবিধাগুলো পাবেন:

  •  আপনি বেশী লাভ করতে পারবেন কারণ সাধারণত ছোটো শহরগুলোতে কম সংখ্যক মুদীর দোকান থাকে। সাধারণত, পণ্য সরবরাহকারীদের থেকে দূরত্বের কারণে জিনিসপত্রের দামও ছোটো শহরগুলোতে নগরীগুলো থেকে বেশী থাকে।
  • কিছু মানুষের জন্য আপনি কর্মসংস্থান করতে পারবেন এবং বেশী মনোযোগ দেবেন হিসাব রাখা এবং কিভাবে নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা বা আরও গ্রাহক আকৃষ্ট করবেন তার দিকে।
  • দোকানের বিক্রি থেকে স্থানীয় কর রাজস্বে অবদান রাখতে পারবেন।
  • আপনার মুদীর দোকানটি ছোটো শহরটিতে নতুন বাসিন্দা আকৃষ্ট করতে সাহায্য করবে। এভাবে আপনি জায়গাটিকে একটি উপযুক্ত আবাসস্থল করে তোলায় ভূমিকা রাখতে পারবেন।
  • আপনি স্থানীয় জনগণকে একটি বিশ্বাসযোগ্য দোকান বা কেনাকাটা করার জায়গা উপহার দিতে পারবেন।

একটি ছোট মুদীর দোকান খোলার নজর-তালিকা

শুধু নিচের আলোচনার দিকে একটু চোখ রাখুন, তাহলেই আপনি ধারণা পেয়ে যাবেন যে, কিভাবে আপনি আপনার মুদীর দোকান খোলার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাবেন।

ব্যবসার রোডম্যাপ

আপনার ব্যবসার একটি রোডম্যাপ থাকতে হবে। এতে থাকবে পদক্ষেপ এবং সম্পদের সব পরিকল্পনা, আর্থিক এবং নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সুবিধা, কারিগরি সহায়তা, বাজারজাতকরণ পদক্ষেপসমূহ, এবং ব্যবসায়িক উন্নয়নের মূলধনের স্মপূর্ণ বিবরণ। যেন আপনি আপনার এ ধরনের প্রশ্নগুলোর সব উত্তর পেয়ে যাবেন:

  • আমার একটি মুদীর দোকান খুলতে কি লাইসেন্স লাগবে?
  • আমার একটি মুদীর দোকান খুলতে কি পরিমাণ টাকা লাগবে?
  • কোথায় আমি সবচেয়ে কম খরচে একটি ছোটো ব্যবসার জন্য ব্যবসায়িক ঋণ পাবো?
  • একটি মুদীর দোকান কতোটা লাভজনক?
  • কিভাবে আমি একটি সফল মুদীর ব্যবসা শুরু করতে পারি?
  • কিভাবে একটি ছোটো মুদীর দোকান শুরু করা যায়?
  • মুদীর দোকানগুলো কি অনেক লাভ করে?
  • কিভাবে একটি মুদীর দোকানের রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়? এবং আরও অনেক কিছু।

এই রোডম্যাপ আপনাকে আপনার একটি মুদীর দোকান খোলার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

অবস্থান একটি বড়-বিষয়

একটি ব্যবসার জন্য অবস্থান অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ, তা সে বইয়ের দোকানই হোক বা মুদীর দোকান। আপনার ছোটো দোকানটির অবস্থান সতর্কতার সাথে পছন্দ করুন। নিচের বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখার চেষ্টা করবেন:

  • জনসংখ্যা বিষয়ক তথ্যাদি:

আপনি যে এলাকায় আপনার দোকানটি খোলার কথা ভাবছেন সে এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে একটা যথার্থ গবেষণা করুন। যেমন, তাদের সংখ্যা, তাদের পেশা, সম্ভাব্য আয়, ক্রয় অভ্যাস, এবং গড়ে যানবাহন ব্যবহার বা পায়ে হাঁটার অভ্যাস।

  • কাছাকাছি:

সবার আগে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনার গ্রাহকে কথা ভাবুন। এমন একটি অবস্থান পছন্দ করুন যা আপনার নির্ধারিত গ্রাহকদের আবাসস্থলের কাছাকাছি হবে।

  • এলাকা:

এলাকাটি বিচক্ষণতার সাথে নির্বাচন করুন যাতে আশপাশের ভৌগলিক এলাকা ব্যবসাটির জন্য সহায়ক হয়। একটি গবেষণা চালান যে, এলাকাটির লোকজনের একটি দোকানে যেতে কত দূর পর্যন্ত হাঁটতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, এমন একটি জায়গা পছন্দ করুন যেখানে মুদীর দোকানটিতে যেতে লোকজনের গড়ে ১০-মিনিট হাঁটতে হবে।

  • প্রতিযোগিতা:

আপনি যদি এমন একটি এলাকা নির্বাচন করেন যেখানে আপনার আর কোনো প্রতিযোগী নেই তবে আপনি একটা একচেটিয়া সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। কিন্তু প্রতিযোগিতা সবসময়ই খারাপ না। কারণ আপনি যদি দেখেন আপনার নির্বাচিত এলাকায় এমন আরও দোকান আছে, তবে বুঝবেন যে এলাকাটি ব্যবসা-বান্ধব।অন্যরা যা বিক্রি করছে তা থেকে ভিন্ন ধরনের কিছু পণ্য নিয়ে আসারও একটা সুযোগ পাবেন এবং তা থেকে লাভও করতে পারবেন।

  • ট্র্যাফিক:

দোকানের জন্য এমন একটি অবস্থান নির্বাচন করুন যেমন একটি স্কুল, ব্যাংক, পেট্রোল পাম্প, বা হাসপাতালের কাছে যা সারাদিনে বেশী ট্র্যাফিকের বা বেচাকেনার সুযোগ বয়ে নিয়ে আসবে। অন্যভাবে বললে, এমন একটি অবস্থান যেখানে যে কেউ পায়ে হেঁটে বা গাড়ি নিয়ে গিয়ে কিছু জিনিসপত্র কিনতে পারে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কিছু ধারণা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখুন ।

  • লক্ষণীয়তা:

এটা অবশ্যই একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ অনেকেই তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলো এমন একটি মুদীর দোকান থেকে কিনেন যা তাদের যাওয়া আসার পথে পড়ে। আপনার দোকানটি লক্ষণীয় হতে হবে। লোকজন যেন তাদের দৈনিক কাজকর্মে যাতায়াতের পথে সহজেই এটা দেখতে পায়।

  • সহজে পৌঁছানো যায়:

এমন একটি অবস্থান পছন্দ করুন যা একটি রাস্তার কাছে যাতে গ্রাহকরা সহজেই সেখানে পায়ে হেঁটে বা গাড়ি চালিয়ে যেতে পারে। আপনার দোকান যদি বড় রাস্তার কাছে হয় যেখানে সবসময় যথেষ্ট ভীড় থাকে, তবে আপনি সোনায় সোহাগা।

  • আশেপাশের পরিবেশ:

এমন এলাকা বাছাই করুন যেখানে আশেপাশের এলাকায় কোনো অযাচিত কার্যকলাপ হয় না, নতুবা আপনার দোকানের খ্যাতি নষ্ট হবে। আশেপাশের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ এবং সহায়ক এমন এলাকা পছন্দ করুন যাতে আপনার ব্যবসার জন্য সুবিধাজনক হয়।

বাজার গবেষণা

আপনি যে ধরনের ব্যবসা করার কথাই চিন্তা করে থাকুন না কেনো, এর থেকে কাঙ্খিত ফল পেতে যথাযথ বাজার গবেষণা করুন। একটি মুদীর দোকান খোলাও এর ব্যতিক্রম না। সঠিক বাজার গবেষণার জন্য নিচে উল্লেখিত বিষয়গুলোকে আওতায় নেয়ার চেষ্টা করুন।

  • নির্ধারিত বাজার চিহ্নিত করুন:

চিনে নিন কারা আপনার সম্ভাব্য গ্রাহক হতে পারে। তাদের যথার্থ প্রয়োজনগুলো এবং ব্যয়ের ধরনগুলো বোঝার জন্য তাদের প্রয়োজন, জনসংখ্যা-বিষয়ক তথ্যাদি, পছন্দ, এবং আশেপাশের এলাকায় এড়িয়ে যাবার বিষয়গুলো বিবেচনা করুন ।

  • সেই নির্ধারিত বাজারের আচরণ বুঝুন:

আপনার সম্ভাব্য গ্রাহকদের আচরণ অর্থাৎ ব্যয়ের ধরন এবং পছন্দগুলো বুঝুন। তাদের আচরণ এবং পছন্দগুলো যথাযথভাবে বুঝে আরও নির্দিষ্ট এবং নির্ধারিত বাজারজাতকরন পরিকল্পনাগুলো তৈরী করুন যা আপনার গ্রাহকদের সাথে মানানসই হয়।

  • বাজারটির ব্যবহার এবং অবস্থা বিশ্লেষণ করুন:

চাকরীর পরিসংখ্যান এবং খরচের পরিসংখ্যানগুলো পরীক্ষা করে মুদীর দোকানটির চাহিদা এবং বর্তমান বাজারের অবস্থা পরিমাপ করুন। লক্ষ্য হলো এমন একটি যথার্থ স্থান খুঁজে বের করা যেখানে চাহিদা বেশী, কিন্তু বাজারটা এখনও সম্পূর্ণ ব্যবহৃত হয়ে যায়নি, অর্থাৎ তেমন প্রতিযোগিতা নেই।

  • প্রতিযোগিতা চিহ্নিত করুন:

আপনার প্রতিযোগীদের কাজকর্মগুলো বোঝার চেষ্টা করুন যাতে আপনি আরও ভালো বা ভিন্ন অভিজ্ঞতা উপহার দিতে পারেন। খুঁজে বের করুন কিভাবে বার্তা এবং বাজারজাতকরন কৌশলগুলো তাদের জন্য কাজ করছে বা ব্যর্থ হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপের গবেষণা প্রয়োগ করুন এবং আপনার প্রতিযোগীদের অনলাইন ও অফলাইন বৈশিষ্ট্যগুলো খেয়াল করুন যাতে আপনি আপনার প্রতিযোগীদের সম্পর্কে আরও ভালো একটি ধারণা পেতে পারেন।

  • আপনার ইউভিপি বা ইউনিক ভ্যালু প্রোপোযিশন বা অনন্য মূল্য প্রস্তাব চিহ্নিত করুন:

আপনি মুদী সামগ্রী কেনাকাটার ক্ষেত্রে একটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ বা ভিন্ন অভিজ্ঞতা দিতে পারেন এমন একটি বাজারেও যা কিনা সম্পূর্ণ ব্যবহৃত অর্থাৎ অসংখ্য প্রতিযোগী আছে। ধরুন, আপনি আপনার স্থানীয় প্রতিযোগীদের থেকে ভিন্ন ধরনের পণ্যগুলো বিক্রি করতে পারেন। অথবা আপনি একটি নির্দিষ্ট এলাকার ভেতরে বিনামূল্যে পণ্য সরবরাহ সুবিধা দিতে পারেন। আপনার যদি একটা বিশাল স্থানীয় প্রতিযোগিতা থাকে, তবে অন্ততপক্ষে একটি উপায়ে নিজেকে ভিন্ন হিসেবে চিহ্নিত করুন এবং সেই ভিন্নতাগুলোকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়িক কৌশল পরিকল্পনা করুন।

উপরের গবেষণাটি করার পর, আপনার মুদীর ব্যবসাটি আপনার নির্ধারিত বাজারের চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারবে কিনা সে সম্পর্কে একটি উন্নততর ধারণা পাবেন। এরপরও যদি কিছু বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা না পান, তবে আরও স্পষ্ট ধারণা পেতে একটি জরিপ চালানোর কথা বিবেচনা করতে পারেন।

একটি মনে রাখার মতো নাম বাছাই করুন

একটি মনে রাখার মতো নাম গ্রাহকদের মনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি আপনার ব্যববসার জন্য একটি ভিন্ন এবং অনন্য নাম পছন্দ করেন, তবে আপনার গ্রাহকরা অবশ্যই তা মনে রাখবে। নিচে উল্লেখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখুন কিছু ধারণা পেতে:

  • এক-শব্দের নাম চেষ্টা করুন:

এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে এক-শব্দের নাম হবে একটি আদর্শ পছন্দ যেখানে আপনার মনোযোগ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন জিনিস দেখে বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। গ্রাহকরা সহজেই আপনার দোকানের নাম মনে রাখতে পারবে। একটি ছোট এবং মিষ্টি নামের কথা ভাবুন যাতে গ্রাহকরা আপনার ব্যবসার সাথে একে সম্পৃক্ত করতে পারে, যেমন: শপসি, ফুডডেক, ফ্রেশাডো, প্রভৃতি।

খাবার, টাট্কা, মুদী, এবং দোকান বিভিন্ন শব্দ যা মুদী শিল্পের সাথে সম্পর্কিত সেগুলো গুগলে টাইপ করে খুঁজুন। আপনি কিছু সুন্দর ধারণা পাবেন। কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেয়ারও চেষ্টা করুন যেমন আপনার গ্রাহক কারা? তাদের প্রয়োজনগুলো কি? কিভাবে আপনি আপনার প্রতিযোগীদের থেকে ভিন্ন হবেন? এবং এমনই আরও কিছু প্রশ্ন।

এভাবে আপনি কিছু এক-শব্দের নামের ধারণা পাবেন।

  • ছড়াময় নাম চেষ্টা করুন:

ছড়াময় নামগুলো দুইটি ভিন্ন শব্দকে ছড়ার যাদুতে একত্রে নিয়ে আসে যেমন: ফাংকি ফুড, ওশেন অর্গানিক, ন্যাচারাল নির্ভানা, প্রভৃতি। এটা আপনার গ্রাহকদের মনে একটি ভিন্ন প্রভাব ফেলবে এবং তারা এটা মনে রাখবে। গুগলে আপনার দোকানের জন্য ছড়াময় একটি নাম খোঁজার সময় অর্ধেক-ছড়া, সম্পূর্ণ-ছড়া, প্রভৃতি টাইপ করার চেষ্ট করুন। অথবা আপনার মুদীর ব্যবসার জন্য একটি আনলাইন নাম জেনারেটর বা উৎপাদক ব্যবহার করুন।

  • কল্পনাপ্রসূত ভাবুন:

কল্পনাপ্রসূত নামগুলো আপনার গ্রাহকদের মনে একটি ছবি তৈরী করতে পারে যাতে তারা আপনার দোকানের নাম মনে রাখতে বাধ্য হয়। আর্থ, ফ্লেম, স্টর্ম, এ ধরনের শব্দগুরো চেষ্টা করুন এবং আর্থ ফুড, ফ্লেম ফ্রেশ, স্টর্ম সুপারমার্কেট এ ধরনের নামগুলো চিন্তা করতে পারেন। মূল শব্দটির কথবা ভাবুন, আরও ভাবুন দোকানটিতে আপনি আপনার গ্রাহকদের কি অনুভূতি বা অভিজ্ঞতা উপহার দেবেন, এবং তারপর নাম বাছাইয়ের কাজে হাত দিন। এজন্য অনলাইনে বিভিন্ন নাম জেনারেটর বা উৎপাদক যন্ত্র আছে।

  • স্থানীয়ভাবে চিন্তা করুন:

আপনি কি আপনার মুদীর ব্যবসার জন্য একটি ব্যক্তিগত এবং অনন্য নাম সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন? তাহলে স্থানীয়ভাবে চিন্তা করুন। আপনার স্থানীয় গ্রাহকদের সাথে সম্পর্কিত করতে চেষ্টা করুন, এবং অবস্থা অনুযায়ী আপনার দোকানের নাম দিন। যেমন, ঢাকা ডেক, গুলশান গ্রসারি, সলিমুল্লাহ স্টোর, প্রভৃতি।

যে নামই পছন্দ করুন না কেনো মনে রাখবেন তা যেন আপনার ব্যবসার ধরন, নির্ধারিত গ্রাহক, এবং ব্যবসায়িক লক্ষের সাথে সম্পর্কিত হয়। মুদীর দোকানের জন্য বিভিন্ন নাম জেনারেটর অনলাইনে পাওয়া যায়, আরও ভালো ধারণা পেতে শুধু সেগুলোর যেকোনো একটি ব্যবহার করুন।

আইনি নথি/লাইসেন্স

আপনার একটি মুদীর দোকান খুলতে নিচে উল্লেখিত আইনি নথিগুলো বা লাইসেন্সগুলো লাগবে:

  • নেইম ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট/ নাম ছাড়পত্র:

আপনাকে পরীক্ষা করে দেখতে হবে, যে নামটি আপনি আপনার ব্যব্সার জন্য পছন্দ করেছেন তা আগেই অন্য কোনো ব্যবসা ব্যবহার করেছে কিনা। এই ব্যবস্থাটি ২০০৩ সাল থেকে কম্পিউটারাইজ্ড হয়েছে। যখন আপনি খুঁজে পেয়ে যাবেন যে, আপনার পছন্দ করা নামটি অনন্য বা একক, আরজেএসসি বা রেজিস্টার্ড অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানি এ্যান্ড ফার্মের ওয়েবসাইটে গিয়ে নাম ছাড়পত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করুন। সম্মতিটি পেতে এক ব্যবসায়িক দিনের থেকে বেশী সময় লাগবে না।

আপনার আবেদন অনুমোদিত হবার পর, আপনার পছন্দ করা নামটি ছয় মাসের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এর জন্য আপনার প্রায় ৬০০ টাকা লাগবে। এই ছাড়পত্রটি প্রিন্ট করে রাখুন এবং একে ইনকরপোরেশন বা সংগঠনের অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ্পত্রের সাথে একত্রে রাখুন। আপনাকে এগুলো সব একত্রে আরজেএসসিতে জমা দিতে হবে।

  • মেমোরান্ডাম অফ অ্যাসোসিয়েশন (এমওএ):

এই নথিটি আপনার কোম্পানির বাহ্যিক কার্যাবলী পরিচালনা করে এবং আপনার কোম্পানির আর্টিকেল্স অফ অ্যাসোসিয়েশনের পরিপূরক।

  • আর্টিকেল্স অফ অ্যাসোসিয়েশন (এএ):

এটা আপনার ব্যবসার কার্যাবলীকে নির্দিষ্ট করে এবং আপনার ব্যবসার লক্ষ্যকে সংজ্ঞায়িত করে। সংক্ষেপে বললে, এটা আপনার ব্যবসার অভ্যন্তরীন সংগঠণকে অন্তর্ভূক্ত করে।

  • ট্রেজারি স্ট্যাম্পের জন্য মূল্য পরিশোধের প্রমাণ:

নিশ্চিত করুন যে, আপনি স্থানীয় ট্রেজারি বা রাজস্ব অ্যাকাউন্টে স্ট্যাম্প ডিইটি বা ডাকটিকেট শূল্ক, নির্ধারিত ব্যাংকে পরিশোধ করেছেন। এই ফিটি ২,৫০০ টাকা হবে যদি আপনার অনুমোদিত শেয়ার মূলধন ১,০০০,০০০ টাকার মধ্যে হয়। এটা এমওএ স্ট্যাম্পের জন্য ৫০০ টাকা এবং এএ-তে স্ট্যাম্প লাগানোর জন্য ২০০০ টাকা অন্তর্ভূক্ত করে।

  • ফরম ১ (কোম্পানির রেজিস্ট্রেশনের ঘোষণা)
  • ফরম ৬ (রেজিস্টার্ড অফিসের নোটিস)
  • ফরম ৯ (পরিচালকবর্গ হিসেবে কাজ করার সম্মতি)
  • ফরম ১০ (যারা পরিচালকবর্গ হিসেবে কাজ করতে সম্মতি জানিয়েছেন তাদের তালিকা)
  • ফরম ১২ (পরিচালকবর্গ, ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধিবর্গ, এবং ব্যবস্থাপকদের একটি বিবরণী)
  • ট্যাক্স আইডি নাম্বার (টিন)

আপনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে আপনার মুদীর দোকানটি খোলা এবং আপনার ব্যবসা শুরু করার আগে কর রেজিস্ট্রেশনের জন্য জোনাল কর বিভাগে, কোম্পানি সার্কেলের কর উপ-কমিশনের কাছে যেতে হবে । এটা এনবিআর (ন্যাশনাল বোর্ড অফ রেভিনিউ) বা জাতীয় রাজস্ব বিভাগের অধীনে এবং আপনি সেখবান থেকে একটি একক ট্যাক্স আইডি নাম্বার পাবেন। এটার জন্য আপনার কোনো টাকা লাগবে না এবং মোট চার দিন সময় লাগবে।

  • কোম্পানি সীল:

এটার জন্য প্রায় একদিন সময় লাগবে এবং প্রায় ৫০ টাকা খরচ হবে।

  • ট্রেড লাইসেন্স:

সিটি কর্পোরেশন থেকে আপনার দোকানের ট্রেড লাইসেন্সটি নিয়ে নিন। আপনার নিকটস্থ উত্তর বা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে আবেদন করুন। এর জন্য আপনার ৫০০০ টাকা খরচ হবে এবং প্রায় ৩ দিন সময় লাগবে।

নিচে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো আপনার ট্রেড লাইসেন্সের সাথে সংযুক্ত করুন:

রেজিস্টার্ড অফিসের লীয চুক্তির কপি

আপনার টিন সার্টিফিকেট বা কর সনাক্তকরণ সংখ্যার সনদ

আপনার সার্টিফিকেট অফ ইনকরপোরেশন বা সংগঠণের সনদ

আপনার আর্টিকেলস এবং মেমোরান্ডাম অফ অ্যাসোসিয়েশনের অনুমোদিত কপি।

  •  ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর রেজিস্ট্রেশন:

এনরবিআর বা জাতীয় রাজস্ব বিভাগের অধীনে ভ্যাট, এক্সাইস, এবং কাস্টম কমিশনের সাথে রেজিস্টার করুন। আপনার দোকানটি যে এলাকায় অবস্থিত সে এলাকার এক্সাইস, ভ্যাট, এবং কাস্টম্স বিভাগ দোকানটির ভ্যাট নিয়ন্ত্রণ করে। সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে তিন দিন সময় লাগবে এবং আপনার কোনো খরচ হবে না।

মুদীর ব্যবসা শুরু করুন এই ধাপগুলোর মাধ্যমে:

নিচে উল্লেখিত ধাপগুলো অনুসরণ করুন এবং আপনার স্বপ্নের যাত্রাটি শুরু কররুন।ধাপ-১: উপযুক্ত দোকানের নামটি নির্বাচন করুন।
ধাপ-২: নিজেকে বাংলাদেশের আইন এবং নিয়মকানুন সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন রাখুন। উপরে উল্লেখিত সব আইনি নথি/লাইসেন্সগুলো প্রস্তুত করুন।
ধাপ-৩: আপনার নির্ধারিত ব্যাংকটিতে যান এবং উপরে উল্লেখিত স্ট্যাম্প শুল্ক ফি পরিশোধ করুন।
ধাপ-৪: রেজিস্ট্রেশনের সব কাগজপত্র আরজেএসসিতে (রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিস এন্ড ফার্মস) ।
এই ধাপটি সম্পন্ন করতে একদিন লাগবে এবং আপনার রেজিস্ট্রেশন ফাইলিং ফি হিসেবে প্রায় ১,২০০ টাকা এবং প্রায় ৩,৬৪৫ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে খরচ হবে।
আপনার দোকানের রেজিস্ট্রেশরনের জন্য নিচের কাগজপত্রগুলো জমা দিন:
মেমোরান্ডাম এবং আর্টিকেল অফ এ্যাসোসিয়েশন
আপনার নির্ধারিত ব্যাংক থেকে রাজস্ব স্ট্যাম্পের মূল্য পরিশোধের প্রমাণ
নাম ছাড়পত্রের সনদ
ফরম ১ (কোম্পানির রেজিস্ট্রেশনের ঘোষণা)
ফরম ৬ (রেজিস্টার্ড অফিসের নোটিস)
ফরম ৯ (পরিচালকবর্গ হিসেবে কাজ করার সম্মতি)
ফরম ১০ (যারা পরিচালকবর্গ হিসেবে কাজ করতে সম্মতি জানিয়েছেন তাদের তালিকা)
ফরম ১২ (পরিচালকবর্গ, ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধিবর্গ, এবং ব্যবস্থাপকদের একটি বিবরণী)

ধাপ-৫: উপরোল্লেখিত উপায়ে আপনার টিন আদায় করুন।

ধাপ-৬: আপনার কোম্পানির সীল তৈরী করুন।

ধাপ-৭: উপরোল্লেখিত উপায়ে আপনার ট্রেড লাইসেন্সটি আদায় করুন।

ধাপ-৮: উপরোল্লেখিত উপায়ে আপনার ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন।

এখানে আপনি পাবেন বাংলাদেশে কিভাবে একটি মুদীর দোকান রক্ষণাবেক্ষণ করবেন

এখন, চলুন বাংলাদেশে একটি মুদীর দোকানের রক্ষণাবেক্ষণের দিকে নজর দেয়া যাক এবং কিভাবে আপনি মুদীর দোকানটির লাভ বৃদ্ধি করবেন যে সম্পর্কে আপনাকে এই ২০২৩ সালে অবশ্যই জানতে হবে। কারণ মুদীর দোকানের লাভের পরিমাণ অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় অনেকটা কম।

জেনে নিন একটি মুদীর দোকান রক্ষণবেক্ষণের শীর্ষ উপায়গুলো/ মুদীর দোকানের লাভ বৃদ্ধির সবচেয়ে ভালো উপায়গুলো:

আপনার সব আইনি নথিগুলো এবং লাইসেন্সগুলো আপডেটেড বা হাল নাগাদ রাখুন:

এটা আপনাকে বাংলাদেশে কোনো রকম আইনি জটিলতা ছাড়া নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যেতে সাহায্য করবে। অনেক দোকান মালিকরা এগুলো এড়িয়ে যান এবং দীর্ঘ মেয়াদে বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হন।

নিজেকে বাংলাদেশের ব্যবসার আইন এবং নিয়মকানুন সম্পর্কে ভালোভাবে সচেতন রাখুন:

এটাও আপনাকে আপনার মুদীর দোকান কোনো রকম আইনি সমস্যা ছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ করতে সাহায্য করবে। আপনি যে ব্যবসাই করুন না কেনো, আপনি যে দেশে ব্যবসা করছেন সেদেশের ব্যবসার আইন এবং নিয়মকানুন সম্পর্কে আপনাকে ভালোভাবে সচেতন হতে হবে।

আপনার গ্রাহকদের জন্য ব্যক্তিগত বার্তা তৈরী করুন:

আপনার যদি একটি বিশেষ জনগোষ্ঠী বা স্থানীয় প্রতিবেশীদের জন্য ব্যবসা হয়, তবে আপনি ব্যক্তিগত বার্তা তৈরীর সুবিধাটি নিতে পারেন এবং গ্রাহকদের জন্য বিশেষ পণ্যসমূহ যোগ করতে পারেন যাদের আপনার দোকানে আসার সম্ভাবনা খুব বেশী। অর্থাৎ স্থানীয় অনুভূতি, কেনাকাটার অভ্যাস, এবং পছন্দগুলো দিয়ে আপনার দোকানের তাকগুলো ভরিয়ে তুলুন।

কিছু অনন্য অনুভূতি সংযুক্ত করুন:

আপনি যদি আপনার প্রাসঙ্গিক গ্রাহকদের সংখ্যা বাড়াতে চান তবে আপনার স্বনির্ভর দোকানটিতে কিছু অনন্য অনুভূতি যোগ করার চেষ্টা করুন। যেমন, একটি চা বা কঠির দোকান যোগ করতে পারেন, বিনামূল্যে দেয়ার জন্য দৈনিক কিছু পণ্য নমুনা রাখতে পারেন, একটি রেস্টুরেন্ট বা খাবার দোকান যোগ করতে পারেন যেখানে গ্রাহকরা দৈনন্দিন কেনাকাটা করার আগে কিছু খেতে পারে, এবং এমন আরও অনেক কিছু।

পণ্যসমূহের পেছনের গল্প বলুন:

স্থানীয় ভোক্তারা পছন্দ করবেন যখন তারা স্থানীয় উৎপাদনকারী বা খামারীদের কাছ থেকে তাদের খাদ্য সামগ্রীগুলো পাবেন। কিন্তু তাকে শুধু স্থানীয় পণ্যগুলো যোগ করলেই তা আপনার জন্য কাজ করবে না। পণ্যগুলোর পেছনের গল্পগুলোও যোগ করুন এবং সেই সাথে পণ্য উৎপাদনকারীদের গল্পও যোগ করুন।

আপনার কর্মচারীদেরকে আপনার পণ্যগুলো সম্পর্কে শিক্ষিত করে তুলুন:

 আপনার বিক্রয় প্রতিনিধিদের আপনার পণ্যগুলো সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে যাতে তারা গ্রাহকদের তাদের ক্রয় সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে। অনেকসময়, আপনার গ্রাহকরা অনলাইন দোকানের থেকে একটি ইট-কাঠ-পাথরের দোকান বেশী পছন্দ করবেন শুধুমাত্র তাদের কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য পাওয়ার জন্য।

চলমান চিন্তা করুন:

এখন, সবাই যেখানেই যাক না কেনো তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে বেশী অভ্যস্ত। তাই আপনার দোকানের জন্য একটি অ্যাপ তৈরী করার কথা ভাবুন যাতে গ্রাহকরা অনলাইনে অর্ডার করতে পারেন, মূল্যছাড় পেতে পারেন, কূপণ, বিশেষ অফার, আপনার দোকানের সব পণ্যগুলোর একটি সারসংক্ষেপ, প্রভৃতি পেতে পারেন।

কূপণ এবং বিশেষ অফারের ক্ষেত্রে সৃজনশীল প্রয়োগ ব্যবহার করুন:

শুধুমাত্র দামের উপর ভিত্তি করে আপনার স্বনির্ভর দোকানটির বড়ো সুপারমার্কেটগুলো থেকে ভালো ফলাফল করাটা একটু কঠিন। আপনার গ্রাহকদের আরও ভালো সেবা প্রদান করতে মোবইল ফোন বা ইমেইলের মাধ্যমে কিছু বিশেষ ধরনের পণ্যের ওপর বিশেষ অফার, এবং কূপণ দেয়ার চেষ্টা করুন।  

প্রচলিত দোকানের কাঠামো পূনর্গঠণ করুন:

প্রচলিত দোকান মালিকদের থেকে একটু অন্যভাবে চিন্তা করুন। আপনি যদি একটি বিশেষ ধরনের ব্যবসায় মনোনিবেশ করে থাকেন, তবে সেই বিশেষ পণ্যটিকে তাদের গ্রাহকদের জন্য সহজলভ্য করুন।

কিছু বিকল্প অনলাইনে রাখুন:

এখন আপনি আরেও অনলাইন বা ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছেন। তাই আপনার গ্রাহকদের জন্য কিছু বিকল্প উপায় অনলাইনে রাখুন যাতে আরও বেশী বিক্রি করতে পারেন।

গিগ অর্থনীতি ব্যবহার করুন:

গিগ অর্থনীতি নিয়োগকারীদের কর্মীদেরকে চুক্তির ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিয়োগ দেয়ার জন্য এবং তাদের কাছ থেকে সেই সময়ের মধ্যে সর্বাধিক সুবিধা নিতে অনুপ্রাণিত করে। আপনি আপনার মুদীর দোকানের ক্ষেত্রেও এটা প্রয়োগ করতে পারবেন, এবং এভাবে, আপনাকে অনেক বেতন দিয়ে অনেক কর্মী নিয়োগ করতে হয় না এবং সেই কর্মীদের অনেক বেশী বেতন দিতে হয় না।

নিজের ব্যক্তিগত সেবার প্রতি মনোনিবেশ করুন:

আপনার ব্যক্তিগত সেবার প্রতি গভীরভাবে মনোনিবেশ করুন যাতে আপনি আপনার ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠতে পারেন। আপনার কর্মচারীদের আপনার পণ্য এবং সেবাগুলোর সম্পর্কে ভালোভাবে শিক্ষিত করে তুলুন যাতে তারা আপনার গ্রাহকদেরকে সবচেয়ে ভালো সেবা উপহার দিতে পারে। 

বোনাস টিপস্

আপনার ব্যব্সাটিকে অনলাইনে প্রচার করুন

এখন আপনি একটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতির যুগে বাস করছেন । এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সাথে, অনলাইন উপস্থিতি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে গিয়েছে। তাই আপনার ব্যবসার জন্য অনলাইন হওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে কারণ অনলাইন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা দারুনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনার ব্যবসাকে নিচের জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমগুলোতে প্রচার করুন:

ফেসবুক:
আপনার ব্যবসার জন্য একটি ফেসবুক পৃষ্ঠা তৈরী করুন, এবং লোকজনকে আমন্ত্রণ জানান পৃষ্ঠাটি লাইক বা পছন্দ করার জন্য। সবাইকে আপনার পণ্য, সেবা, বিশেষ অফার, ছাড়, প্রভৃতির বিষয়ে সচেতন করতে ফেসবুকের পৃষ্ঠাটিতে নিয়মিত পোস্ট দিন।

 মেসেঞ্জার:
আপনার নিয়মিত গ্রাহকদের মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে আপনার বিভিন্ন অফার, ছাড়, বিশেষ পণ্য, এবং সেবাগুলোর সম্পর্কে জানান।

ইন্স্টাগ্রাম:
আপনার দোকানের জন্য একটি ইন্স্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট তৈরী করুন এবং আপনার ব্যবসাকে নিয়মিত পোস্টের মাধ্যমে প্রচার করুন। 

টুইটার:
আপনার ব্যবসার টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলুন এবং অনলাইন প্রচার করুন।

ইউটিউব:
একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরী করুন এবং আপনার ব্যবসাকে প্রচার করুন বিভিন্ন মজাদার ভিডিওর মাধ্যমে।

বুদ্ধিমানভাবে আপনার সব ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ করুন

আপনার সব ব্যবসায়িক লেনদেনগুলো আপনার আঙুলের ডগায় নিয়ে আসুন আমাদের স্মার্ট অ্যাপ হিসাবপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে। এটাতে রয়েছে সহজ ইন্টারফেস, এবং অটো-সিংক বৈশিষ্ট্য, এবং এটা ব্যবহার করতে পারবেন আপনার মোবাইল, ডেস্কটপ, বা ল্যাপটপে। নিচের এই অসাধারণ ফিচারগুলো উপভোগ করুন:

  •  অগণিত পণ্য: যত খুশি পণ্য যোগ করুন।
  • পার্টি: আপনার সুবিধা মতো যেকেোন সময় আপনার গ্রাহক এবং সরবরাহকারীদের যোগাযোগের বিস্তারিত তথ্য ব্যবহার করুন।
  • ক্রয় এবং বিক্রয়: আপনার ক্রয় এবং বিক্রয় লেনদেনগুলোর ব্যবস্থাপনা করুন এবং আরও অনেক কিছু।
  • খরচসমূহ: আপনার খরচগুলো শ্রেণী অনুযায়ী লিপিবদ্ধ করুন।
  • রিপোর্টস: বিভিন্ন সাপ্তাহিক, মাসিক, এবং বার্ষিক রিপোর্ট তৈরী করুন এবং দেখুন। তাদেরকে পণ্য এবং পার্টি অনুযায়ী বিভক্ত করুন। সেগুলো পিডিএফ বা এক্সেল রূপে রূপান্তরিত করে সহজেই শেয়ার করুন।
  • সেটিংস্: অ্যাপ এবং এর বিভিন্ন উপাদান সহজেই পরিচালনা করুন। আপনার কোনো উন্নত জ্ঞানের প্রয়োজন নেই।
  • মূল্য পরিকল্পনা: তিনটি র‌ূপে পাওয়া যায় :
    Ø  বেসিক- ফ্রি
    Ø  প্রিমিয়াম- মাসিক ফি মাত্র ৯৯ টাকা
    Ø  বিজনেস- মাসিক ফি মাত্র ১৯৯ টাকা
    এই অসাধারণ অ্যাপটি শুধু আপনার সময়ই বাঁচাবে না, সেই সাথে আপনাকে নিখুঁত হিসেব রাখতে সাহায্য করে আপনার ব্যবসাকে অসীম সম্ভাবনার সাথে বিস্তার লাভ করতে সাহায্য করবে।

পরিশেষে:

এখন, আপনি অবশ্যই কিভাবে বাংলাদেশে একটি মুদীর ব্যবসা শুরু করবেন এবং টিকিয়ে রাখবেন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ের বিস্তারিত সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন। তাই জোরে সোরে আপনার ব্যবসা শুরু করুন বা সফলভাবে আপনার ব্যবসা চালান যদি ইতিমধ্যেই আপনি একটি মুদীর দোকানের মালিক হয়ে থাকেন। এগিয়ে যান!!!

Search
সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ
আজই আমাদের অ্যাপ ডাউনলোড করুন
অনলাইন বা অফলাইনে যেকোন জায়গা থেকে সহজেই আপনার দৈনন্দিন ব্যবসায়িক লেনদেন পরিচালনা করুন।